দিনভর এ ভাবেই প্রতিবাদ পড়ুয়াদের। বৃহস্পতিবার কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: পাপন চৌধুরী
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সামনে এসেছিল সেখানের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের নাম। এ বার ঐশীর জেলা, পশ্চিম বর্ধমানেও ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে কোনও ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ছাড়া আন্দোলনে নামলেন কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ। টানা তিন দিন এই বিক্ষোভ চলছে। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক ভবনের গেট আটকে অবস্থান শুরু করেন পড়ুয়ারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশও ডাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর স্তরের আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা জানান, সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, সিমেস্টার পিছু ফি ৩৭৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১,৩৫০ টাকা করা হয়েছে। এর পরেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন পড়ুয়ারা। তাঁরা কয়েক দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বর্ধিত ফি প্রত্যাহারের জন্য মৌখিক ভাবে জানান। পড়ুয়াদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ জানান, সিদ্ধান্তের নড়চড় হবে না। এর পরে মঙ্গল ও বুধবার পড়ুয়ারা প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
এর পরে এ দিন সকাল থেকে শুরু হয় তুমুল বিক্ষোভ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র দীপঙ্কর রুইদাস বলেন, ‘‘তিনটি সিমেস্টার এখনও বাকি। এই টাকা ফি দিতে হলে মাঝপথে পড়া ছাড়তে হবে।’’ আইনের ছাত্র শেখ আহমেদ আলিও বলেন, ‘‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ভাবে ফি বাড়ানো হলে পড়াশোনার খরচ জোগাড় করব কী ভাবে? পড়াশোনা চালানোটাই অসম্ভব হয়ে যাবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই বিক্ষোভের জেরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রার, ডেপুটি রেজিস্ট্রার, কন্ট্রোলার, ডেপুটি কন্ট্রোলার-সহ অনেক আধিকারিকই আটকে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতির সামাল দিতে পুলিশও ডাকা হয়েছিল। বিক্ষোভকে সমর্থন করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রভাবিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক আদর্শ শর্মাও।
যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের দাবি খতিয়ে দেখতে কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যতটা সম্ভব ফি কমানো যায়, তা দেখা হবে। পাশাপাশি, যে সব পড়ুয়া টাকা দিতে অসমর্থ, তাঁদের সহযোগিতা করা হবে।’’ একই কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শান্তনু ঘোষও।