Student

কাজের ফাঁকে পড়া চালিয়ে সফল গুপিন

এমন কর্মীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

গুপিন মার্ডি। নিজস্ব চিত্র

বি-টেক পাস করার পরেও চাকরি না পেয়ে জেলাশাসকের দফতরে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। উত্তীর্ণ হয়ে বছরখানেক আগে কাজে যোগ দেন। কাজের ফাঁকে পড়াশোনা চালিয়ে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে পরীক্ষা দেন। সেই পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হয়েছেন বীরভূমের নলহাটি থানার আলমপুর গ্রামের ২৬ বছরের গুপিন মার্ডি। কয়েকদিনের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরে কাজে যোগ দেওয়ার কথা তাঁর।

Advertisement

এমন কর্মীকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘এক দিন খাবার দেওয়ার পরে ইতস্তত করতে দেখি গুপিনকে। জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, ও বি-টেক পাশ করেছে। এখন ও ইঞ্জিনিয়র পদে যোগ দেবে। গুপিনের ইচ্ছা আর অধ্যবসায় প্রশংসনীয়।’’ আর গুপিন বলেন, “জেলাশাসকের নজরে আসার পরেই আমার সমস্যা কেটে গিয়েছে। কী ভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে, কী ভাবে ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে নিজেকে তুলে ধরতে হবে, উনিই শিখিয়ে দিয়েছেন। কাজের ফাঁকে পড়া, অনলাইন তথ্য-সংগ্রহ করাতেও জেলাশাসক সাহায্য করেছেন।’’

২০০৯ সালে ৭২ শতাংশ নম্বর নিয়ে মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেন গুপিন। সেখানে তিনি আবাসিক ছাত্র ছিলেন। মাধ্যমিকের পরে বীরভূমের রামপুরহাট জিতেন্দ্র বিদ্যাপীঠ থেকে ৭০ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন। জয়েন্ট এন্ট্রান্সে উত্তীর্ণ হয়ে সিউড়ি থেকে ২০১৫ সালে বি টেক করেন। বি টেকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৮৪ শতাংশ। পরের দু’বছর চাকরি পাননি বলে পরিবার সূত্রে প্রাপ্ত ছ’বিঘা জমিতে চাষ করতে থাকেন।

Advertisement

২০১৭ সালে অসুখে ভুগে গুপিনের বাবা মিখাইল মাড্ডি মারা যান। সে বছরই ‘জনজাতি উন্নয়ন সংস্থা’র মাধ্যমে কলকাতায় চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পান গুপিন। ২০১৮ সালে সরকারি চতুর্থ শ্রেণির পদের পরীক্ষা দেন। ২০১৯-এর মে-তে গুপিন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনে যোগ দেন।

কাজের ফাঁকে গুপিন বলেন, ‘‘একটা সময় হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পরীক্ষাও দিই। চাকরিটা পাওয়ায় পরিবারের অনেক উপকার হল।’’ তাঁর ভাই ম্যানুয়াল মার্ডি এমএসসি করছেন। তাঁর কথায়, “সংসারের হাল ধরার জন্য দাদার ওই চাকরিটা জরুরি ছিল। কিন্তু চাকরি করতে করতেও দাদা মনের জোরে পড়াশোনা করে গিয়েছে।’’ গুপিনের সহকর্মীরা জানান, জেলাশাসকের ঘরের সামনে একটি সোফায় বসে বই নিয়ে পড়তেন গুপিন। অধ্যবসায় আর চেষ্টাই তাঁর শক্তি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement