অচেনা উমা
COVID Warriors

Covid19: বয়স হলেও হার মানেননি বন্দনা

ষাটোর্ধ্ব বন্দনা বয়সকে থোড়াই কেয়ার করেন। রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোই তাঁর এক মাত্র লক্ষ্য।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২১ ০৮:১৬
Share:

বন্দনা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

তাঁরা আঁধারে আলো। করোনা-কালে দুর্গা আবাহনের পর্বে স্বপ্রভায় দীপ্ত মৃন্ময়ীদের সঙ্গে পরিচয়।

Advertisement

বাঙালির সব থেকে বড় উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়েছে। আলোকসজ্জায় সেজে উঠছে শহর থেকে শহরতলি। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে করোনার জেরে সমস্যায় রয়েছেন অনেকে। বহু মানুষের রুজি-রোজগারে টান পড়েছে। এরই মাঝে করোনার শুরু থেকেই কার্যত ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তিনি চিকিৎসক হোক বা নার্স। কিংবা হাসপাতালের অন্য কর্মীরা। তাঁরা করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছেন এখনও। সেই দলে রয়েছেন কাঁকসার রাজবাঁধের একটি বেসরকারি কোভিড হাসপাতালের ‘নার্সিং সুপার’ বন্দনা মণ্ডলও।

ষাটোর্ধ্ব বন্দনা বয়সকে থোড়াই কেয়ার করেন। রোগীকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোই তাঁর এক মাত্র লক্ষ্য। তিনি জানান, ২০২০-তে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ও তিনি এই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু সে সময় অতটাও মানুষ সংক্রমিত হচ্ছিলেন না, যতটা এ বছর হয়েছিলেন। এ বছর চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদেরও অনেকে সংক্রমিত হয়েছেন। অনেকের প্রাণও গিয়েছে। কিন্তু সে সব ভুলে নিজের কাজ করে মানুষের সেবায় নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রেখেছেন বন্দনা। এই বয়সে ‘পিপিই কিট’ পরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হচ্ছে করোনা-রোগীদের সেবায়।

Advertisement

বন্দনার সেবায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে বার্নপুরের রাজীব চক্রবর্তী, হাওড়ার সাঁতরাগাছির চৈতালি পাল বলেন, “বেশ কয়েকদিন ওই হাসপাতালে ছিলাম। বন্দনাদি খুব ভাল দেখাশোনা করেছিলেন।” তাঁর কাজের প্রশংসা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের তরফে শুভ্রশঙ্খ ভট্টাচার্য বলেন, “এই বয়সে উনি যে ভাবে কাজ করে চলেছেন তা সত্যিই অভূতপূর্ব। তাঁর ক্ষমতা অনুযায়ী তিনি যতদিন কাজ করতে চান, করতে পারেন।” মায়ের কাজে খুশি দুই মেয়ে সৌমিতা মজুমদার ও সুদীপ্তা মৈত্রও। তাঁদের প্রতিক্রিয়া, “এ ভাবেই মানুষের সেবা করুক মা।”

বন্দনা বলেন, “সকলেই নিজেদের ঘরবাড়ি ভুলে শুধু হাসপাতালেই কাজ করে গিয়েছেন। এক সময় চার দিকে শয্যা-সঙ্কট শুরু হয়েছিল। সে দিন যাতে ফের না ফিরে আসে, তার জন্য মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।” তাঁর পরামর্শ, “এখন সংক্রমণ অনেকটা কমে গেলেও, আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। বিশেষ করে পুজোর কটা দিন। কারণ, দুর্গাপুজো বাঙালিদের সব থেকে বড় উৎসব। আমরা চাই, সকলে আনন্দ উপভোগ করুক। তাই মাস্ক, হাতশুদ্ধি ব্যবহারের পাশাপাশি, যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে সকলকে। তবেই আমরা আগামীতে উৎসবকে নতুন ভাবে উপভোগ করতে পারব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement