প্রতীকী ছবি।
‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের পাশেই বিজেপির রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে বর্ধমান শহরে। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে যেতে হয় মহকুমাশাসককে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে, মূল অনুষ্ঠান শুরু করে বিজেপি।
তৃণমূলের অভিযোগ, ‘দুয়ারে সরকারের’ শিবিরের জন্য পুরসভা প্রশাসনকে টাউন হল ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। অথচ, মঙ্গলবার সকাল থেকে টাউন হলের মাঠ ‘দখল’ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি করছে বিজেপি। অভিযোগ পেয়ে এসডিও (বর্ধমান উত্তর) দীপ্তার্ক বসু পুরকর্তা ও পুলিশকে নিয়ে সেখানে যান। তিনি বলেন, ‘‘কোনও অনুমতি ছাড়াই রাজনৈতিক সভা হয়েছে। আইন অনুযায়ী খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ যদিও বিজেপির দাবি, ওই মাঠের জন্য পুরসভাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তার পরেও এমন অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ দিন দুপুরে ‘আর নয় মহিলাদের অসুরক্ষা’ ব্যানারে ধর্নায় বসেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। মাঠে ধর্নার সঙ্গে অনুষ্ঠান ভবনে সরকারি শিবির চলছিল। সেখানে আসা ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশ রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর উমা সাঁই বলেন, ‘‘একটা সরকারি কর্মসূচি চলছে, সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচির অনুমোদন মেলে কী ভাবে? নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি।’’ আর এক বিদায়ী কাউন্সিলর সুশান্ত প্রামাণিকেরও প্রশ্ন, ‘‘অনুমোদন না থাকলে কর্মসূচি হয় কী ভাবে?’’ তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোকন দাসও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানান।
সভায় হাজির বিজেপির মহিলা মোর্চার কেন্দ্রীয় সভানেত্রী বনিতা শ্রীনিবাসন ও রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালের পাল্টা অভিযোগ, গত তিন মাসে এ জেলায় ৪০টি মহিলা নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এই তথ্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে রাজ্যে নারী সুরক্ষার হাল। সভার অনুমতি নিয়ে অগ্নিমিত্রার দাবি, জেলা নেতৃত্ব বিষয়টি জানেন। তৃণমূলের মহিলা সভানেত্রী শিখা দত্ত সেনগুপ্তের যদিও দাবি, ‘‘এ রাজ্যের মহিলারা সুরক্ষিত, সবাই জানেন। কিন্তু এনসিআরবি রিপোর্ট দেখলেই বোঝা যায় বিজেপিশাসিত রাজ্যে মহিলারা কতটা নির্যাতিত।’’
বিজেপির সাংগঠনিক জেলার (বর্ধমান সদর) অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কর্মসূচি করতে চেয়ে পুরসভায় মাঠ ভাড়ার টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।’’ জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীও বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার অমিত গুহর দাবি, ‘‘মেমো নম্বর দিয়ে চিঠি করে সময় উল্লেখ করে যে ভাবে লিখিত অনুমতি দেওয়া হয়, সেটা দেওয়া হয়নি।’’ তাহলে কে অনুমতি নিতে গিয়েছিলেন বা কী ভাবে অনুমতি চাওয়া হয়েছে, আর কিছু বলতে চাননি তিনি।