ছড়িয়ে পড়েছে এমনই নানা মিম। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ধমানের কার্জন গেটের সামনের রাস্তা ভরে গিয়েছে বালিতে। তার উপরে হেঁটে যাচ্ছে ‘মরুভূমির জাহাজ’ উট। বালি জমেছে বর্ধমান স্টেশনেও। সেখানেও ঘোরাফেরা করছে উট। সত্যি নয়। চাঁদিফাটা গরমে যখন অতিষ্ঠ সবার জীবন, তখনই এমন নানা মজার ‘মিম’-এ ভরে উঠছে সামাজিক-মাধ্যম। গরমে নাজেহাল অবস্থায় একটু স্বস্তি পেতে সামাজিক মাধ্যমে মানুষজন মেতেছেন রঙ্গ তামাশায়।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় লড়াই চলছে আশপাশের জেলার মধ্যে। পিছিয়ে নেই বর্ধমানও। গত ক’দিন ধরেই তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাইরে ‘লু’-র দাপট। বাড়িতেও পাখার নীচে স্বস্তি নেই। অসহ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে খানিক ক্ষণের জন্য মনকে হাল্কা করে দিচ্ছে এই পরিস্থিতিকে নিয়ে তৈরি করা ব্যঙ্গ-চিত্রই। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই সব ‘মিমে’ দেখা যাচ্ছে, গরমের চোটে বর্ধমান শহরের ‘আইকন’ কার্জন গেট মরুভূমির চেহারা নিয়েছে। চারপাশে জমে গিয়েছে বালি। আরবের বাসিন্দাদের পোশাকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন লোকজন। হেঁটে যাচ্ছে উট। রাজ কলেজ বা শহরের অন্য জায়গা নিয়েও একই ‘মিম’ ছড়িয়েছে। মজা পেয়ে সে সব মিমেই স্বস্তির শীতলতা ছড়াতে শেয়ার করছেন অনেকে।
চিকিৎসকেরা এই প্রখর গ্রীষ্মে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করছেন। কিন্তু গরমে বাড়ির ভিতরে থাকাও দুঃসহ হয়ে উঠেছে। বিছানায় শুয়েও শান্তি নেই। তেতে রয়েছে বিছানার গদি, বালিশ। কোনও কোনও ‘মিম’-এ দেখা যাচ্ছে বিছানার উপরে বসে রয়েছে উট। সেখানে লেখা ‘বিছানা না মরুভূমি, ধরতে পারছি না’। আবার এমন ‘মিম’ও দেখা যাচ্ছে, সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে একটি গ্রহ রয়েছে। যা সূর্যের একেবারে কাছে অবস্থিত। সে গ্রহের নাম ‘বর্ধমান’।
উত্তরবঙ্গে কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে সেখানে কিছুটা স্বস্তি। এ নিয়েও হা-হুতাশ করছেন নেটিজেনরা— ‘উত্তরবঙ্গে চেরাপুঞ্জি, দক্ষিণবঙ্গে ভেজা গেঞ্জি’। শীতেই বৃষ্টি হয়েছিল এই জেলায়। তার পর থেকে আর বৃষ্টির দেখা নেই। এ নিয়েও ‘মেঘের সন্ধান চাই’ বলেও ‘মিম’ ঘুরছে। সব মিলিয়ে এই অসহ্য গরমে মানুষ যে দিশেহারা, মজার ছলে সেই কষ্টের যাপনই ধরা পড়ছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মানসিক বিভাগের চিকিৎসক সানি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কঠিন সময়ে ভেঙে না পড়ে ইতিবাচক মন নিয়ে নানা রকমের মজার ‘মিম’ তৈরি করে কিছু মানুষ অন্যদের এই পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে বার্তা দিচ্ছেন। এটা অবশ্যই ভাল ব্যাপার।’’