মেলা আয়োজনে আপত্তি দলেই, ফাঁকা পড়ে স্টল

উৎসবের মাঠেই সবলা মেলা করে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন শাসক দলের কয়েক জন নেতা-কর্মী। আয়োজনও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধেন দলেরই একাংশ। সায় দেননি উচ্চ নেতৃত্ব।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৯
Share:

আসানসোল উৎসব প্রাঙ্গণে দেখা গিয়েছে এমন তোরণ। নিজস্ব চিত্র।

উৎসবের মাঠেই সবলা মেলা করে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন শাসক দলের কয়েক জন নেতা-কর্মী। আয়োজনও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাধ সাধেন দলেরই একাংশ। সায় দেননি উচ্চ নেতৃত্ব। ফলে, কল্যাণপুরে আসানসোল উৎসবের প্রাঙ্গণে ফাঁকাই পড়ে রয়েছে সবলা মেলার জন্য তৈরি গোটা চল্লিশ স্টল।

Advertisement

১৮ সেপ্টেম্বর কল্যাণপুর মাঠে শুরু হয়েছে আসানসোল উৎসব। রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক মলয় ঘটককে মাথায় রেখে একটি উৎসব কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিই মেলার আয়োজন করেছে। মেলা শুরুর দিন কয়েক আগে এই প্রাঙ্গণেই সবলা মেলারও আয়োজন করা হবে বলে ঠিক হয়। সেই মতো তোড়জোড়ও শুরু হয়ে যায়। কিন্তু দলেরই একটি অংশ থেকে এর বিরোধিতা করা হয় বলে তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোলের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের জেলা যুব নেত্রী ববিতা দাস আসানসোল উৎসব প্রাঙ্গণে সবলা মেলা আয়োজনের বিরোধিতা করে জেলা নেতৃত্বকে চিঠি দেন। তাতে তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি উৎসব কী ভাবে হতে পারে? তাঁর যুক্তি, আসানসোল উৎসবের জন্য আয়োজকেরা চাঁদা তুলেছেন। কিন্তু সবলা মেলা একটি সরকারি উদ্যোগ। তা আয়োজনের জন্য সরকারের তরফে অনুদান দেওয়া হয়। তা ছাড়া সরকারি মেলার কমিটিতে যে সব পদাধিকারীদের রাখার কথা তাঁদের রাখা হয়নি। এমনকী, নিয়মমাফিক প্রচারও না হওয়ায় স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই মেলার কথা জানতেও পারেননি বলে অভিযোগ করেন ববিতাদেবী। যাঁদের জন্য মেলা তাঁরাই যদি জানতে না পারেন তাহলে মেলার সরকারি যে উদ্দেশ্য, তা-ই পূরণ হবে না বলে দাবি করেন তিনি।

Advertisement

শাসকদলের একটি সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর কলকাতায় দলের বৈঠকে উচ্চ নেতাদের হাতে এই অভিযোগের চিঠিটি তুল দেন দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন। তার পরেই শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, উৎসবের সঙ্গে সবলা মেলা আয়োজন করা যাবে না। এর পরেই তড়িঘড়ি সেই মেলা বাতিল করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, সরকারি দফতর থেকে সবলা মেলা আয়োজনের কথা বলা হয়েছিল। পরে তা বাতিল করা হয়। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন শুধু বলেন, ‘‘সবলা মেলার জায়গা পাল্টেছে। কোথায় হবে, আমরা পরে জানাব।’’

সবলা মেলার জন্য তৈরি হয়েছিল এই সব স্টল। নিজস্ব চিত্র।

সবলা মেলা বাতিল করা হলেও তাড়াহুড়োয় সব ব্যানার সরানো যায়নি। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের সৌজন্যে সবলা মেলার আয়োজনের ব্যানার মেলা শুরুর পরেও প্রাঙ্গণে দেখা গিয়েছে। উৎসব কমিটির দাবি, ভুলবশত তা রয়ে গিয়েছে। কিছু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য আক্ষেপ করেন, উৎসবের সঙ্গে মেলাটি হলে পুজোর আগে তাঁদের কিছুটা সুবিধে হত। এক সদস্যের কথায়, ‘‘উৎসবে প্রতি দিন নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে। অনেক মানুষ আসছেন। মেলায় আমরা স্টল দিতে পারলে ভাল রোজগার হতো।’’ উৎসব প্রাঙ্গণে খাদি ও গ্রামোদ্যোগ, নাবার্ড, মৎস্য-সহ বেশ কিছু দফতর স্টল দিয়েছে। উৎসব কমিটির দাবি, সেগুলিতে ভালই বিক্রিবাটা হচ্ছে।

মন্ত্রী তথা উৎসব কমিটির সভাপতি মলয় ঘটক গোটা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তৃণমূলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন শুধু বলেন, ‘‘যা হয়েছে, দলের নির্দেশেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement