এগারায় খোলামুখ খনির দেওয়ালের এই সব ফাটল থেকেই ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায় বুধবার। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ
খোলামুখ খনির দেওয়ালের ফাটল থেকে বেশ কিছু দিন ধরেই গ্যাস বেরোচ্ছিল বলে অভিযোগ। বুধবার সেখান দিয়ে আগুন ও ধোঁয়া বেরোনোয় বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের এগারায় ইসিএলের ওই খনিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জেরে লাগোয়া এলাকার বাড়িতে ফাটল ধরছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। খনি কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
পুরাতন এগারা কলপাড়ার প্রায় দেড়শো পরিবারের বাস। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সেই বাসিন্দারা সকাল ৮টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের অভিযোগ, খোলামুখ খনির বিস্ফোরণের জেরে গোটা দশেক বাড়িতে ফাটল ধরেছে। প্রায় ছ’মাস ধরে খনির এক দিকে পাথরের দেওয়ালের ফাটল থেকে গ্যাস বেরোচ্ছে। তা এলাকায় ছড়ানোয় শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে এলাকায়। বুধবার ভোর থেকে গ্যাস বেরোনোর জায়গা থেকে আগুন ও ধোঁয়া বেরোতে শুরু করায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যাচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দা অচিন্ত্য বাউড়ি অভিযোগ করেন, তাঁদের বাড়ির একাংশে ফাটল ধরেছে। বাপি বাউড়ি, বিনু থাপারা দাবি করেন, কাঁকরডাঙা থেকে কলপাড়া পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা তৈরি করা হয়েছিল। কয়লা পরিবহণের জেরে সেই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তার কিছু অংশ বসে গিয়েছে। এ দিন তাঁরা একজোট হয়ে আগুন-ধোঁয়া বন্ধ করা ও অন্য সমস্যাগুলি নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবিতে খনির কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখান।
বিজেপির স্থানীয় নেতা আশিস বাউড়ির দাবি, এ দিন অরাজনৈতিক আন্দোলনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে তাঁরা শামিল হয়েছেন। স্থায়ী ভাবে আগুন ও গ্যাস বেরোনো বন্ধ করা ও খনির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নুনিয়া নদীর জল খনিতে ঢালার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। ফাটল ধরা বাড়ি ও রাস্তা সংস্কারের দাবিও জানান। এগারা পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য আশিস বাউড়ি বলেন, ‘‘বছর পাঁচেক আগে এক বার এ ভাবে ধোঁয়া, আগুন বেরিয়েছিল। মাটি ভরাট করে আগুন বেরোনো বন্ধ করা হলেও প্রায় একই জায়গায় তা হচ্ছে। পঞ্চায়েতের তরফে ইসিএলের কাছে স্থায়ী সমাধানের আবেদন করা হয়েছে।’’
খনি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, জল ঢেলে আগুন নেভানো সম্ভব নয়। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘ওই জায়গায় অতীতে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন খনি ছিল। সেই ভূগর্ভে আগুন রয়েছে। সে কারণেই খোলামুখ খনি করা হয়েছে। ফাটল ধরে ভিতরে অক্সিজেন পৌঁছলেই ধোঁয়া বেরোয়। উপযুক্ত পদ্ধতিতে আগুন নেভানো হবে।’’ বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে অন্য সমস্যাগুলির নিষ্পত্তির চেষ্টা হবে বলে আশ্বাস খনি-কর্তাদের।