ভিড়-নেই: মঙ্গলবার কালনার বাজারে। নিজস্ব চিত্র
চাষের জমি থেকে লাভ মেলেনি, প্রাণ নেই কালনার চৈত্র সেলের বাজারেও।
ব্যবসায়ীদের দাবি, দুপুরে গরমের ঠেলায় খরিদ্দারের দেখা মিলছেই না। সন্ধ্যায় দু’এক জন এলেও কেনাকাটার থেকে জিনিস নেড়েচেড়ে দেখেই ফিরে যাচ্ছেন তাঁরা।
কালনার চৈত্র সেলের বাজারে প্রতিবারই ভিড় জমান আশপাশের গ্রামের ক্রেতারা। তাঁদের বেশির ভাগই কৃষক। স্বাভাবিক ভাবেই এ মরসুমের কৃষিজাত পণ্যের দাম পাওয়ার উপর নির্ভর করে তাঁদের বাজার। ব্যবসায়ীদের দাবি, এ বার আলু, পেঁয়াজে দাম না মেলায় অনেকেই কাটছাঁট করেছেন বাজারে। ফলে বেশি ছাড় দিলেও মন্দা কাটছে না।
শহরের বড়-ছোট দোকানের সঙ্গে শপিং মলগুলিতেও আকর্ষণীয় ছাড় চলে এই সময়। বিশেষত সেলের শেষ দিকে ভিড় উপচে পড়ে। কিন্তু এ বার পয়লা বৈশাখ এসে গেলেও খরা কাটছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, অন্যবার সন্ধ্যা থেকে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, কলেজ মোড়-সহ বেশ কিছু জায়গায় ক্রেতা বিক্রেতাদের চাপে হাঁটা যায় না। যানজট দেখা দেয়। এ বার ‘সেল সেল’ বলে গলা ফাটিয়েও তেমন ক্রেতা আসছেন না। যে ক’জন আসছেন তাঁরাও বিছানার চাদর, শাড়ি, জামা নাড়াচাড়া করে দেখেই হাঁটা লাগাচ্ছেন। সাহু সরকার মোড়ের এক ব্যবসায়ী সুমিত বসুর দাবি, ‘‘এ বার ২৫ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছি। তবু খরিদ্দার হচ্ছে না।’’ ফুটপাথে দোকান দেওয়া আর এক ব্যবসায়ী বাবু ঘোষও বলেন, ‘‘প্রতিবারই সেলের সময় কম দামের রেডিমেড জামা বিক্রি করি। চৈত্রের শেষের দিকে ব্যাপক ব্যবসা হয়। এ বার হেঁকে গলা ফেটে গেলেও ভাঁড়ে মা ভবানী।’’
কেন এমন দশা? ব্যবসায়ীদের দাবি, মূলত আলু চাষি ও পেঁয়াজ চাষিরাই কেনাকাটা করেন। কিন্তু দুই চাষেই এ বার লোকসান দেখা দেওয়ায় টানাটানিতে পড়েছেন চাষি। তার উপর রয়েছে মহাজন, ব্যাঙ্ক, সমবায়ের ঋণ। কালনা ২ ব্লকের এক চাষি গোবিন্দ কোলে বলেন, ‘‘লোকসানের ঠেলায় বহু চাষি হিমঘরে আলু মজুত করে রেখেছেন। পেঁয়াজ তো ৪০০ টাকা কুইন্টাল দরেও ফড়েরা কিনতে চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে দেনায় জর্জরিত হয়ে রয়েছি। বাড়ির ছোটদের ছাড়া কারও জন্য কিছু কেনা যায়নি।’’a