—প্রতীকী চিত্র।
বোমা, বন্দুক নিয়ে রায়নার একটি বুথে গোলমাল পাকানোর অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জনের বিরুদ্ধে। পাল্টা প্রতিবাদ হওয়ায় দুষ্কৃতীরা বোমা ফাটাতে ফাটাতে পালাতে যায়। কিন্তু রায়না থানার পুলিশ তাড়া করে রামবাটি গ্রামে তাঁদের ধরে ফেলে। রবিবার ধৃত ১৪ জনকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে মঙ্গলবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠান বিচারক। ঘটনা হল, এই ১৪ জনের মধ্যে এক জনও স্থানীয় বাসিন্দা নন। পুলিশ জানিয়েছে, ১১ জনের বাড়ি বর্ধমান শহরের বিভিন্ন এলাকায়। বাকি তিন জনের মধ্যে দু’জন খণ্ডঘোষের, আর এক জন রায়নার বেলসরের বাসিন্দা। বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশের গ্রেফতারই প্রমাণ করছে তৃণমূল বহিরাগতদের এনে বুথ দখল করতে চেয়েছিল। যদিও তৃণমূল অভিযোগ মানেনি।
রায়নার রামবাটি গ্রামের মাঠনূর পাড়ার ১৩৯ নম্বর বুথে সকাল থেকেই দফায় দফায় গোলমাল হয়। ভোট শুরুর সময়ে বুথ দখলের চেষ্টা হওয়ায় প্রতিরোধ হয়। তিন গ্রামবাসী গুরুতর জখম হন। পুলিশ এলাকা ঘিরে ফেলে। স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগে পুলিশের দাবি, দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে জানা যায়, দু'টি গাড়িতে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতী মাঠনূর পাড়ার বুথের দিকে গিয়েছে। তাঁরা বোমাবাজি করছে। দুষ্কৃতীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র রয়েছে বলেও খবর আসে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে চলে আসেন। পুলিশ আসার আগেই বিরোধীরা একজোট হয়ে প্রতিরোধে নামে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে মাঠ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু গ্রামবাসী ধরে ফেলে। পুলিশ গিয়ে ওই ১৪ জনকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ গাড়ি দু’টি বাজেয়াপ্ত করেছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটে বোমা, ১২টি লাঠি, লোহার রডও উদ্ধার হয়েছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মির্জা আখতার আলি বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের যৌথ প্রতিরোধে পুলিশ বুথ লুটেরাদের গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে। ধৃতরা বহিরাগত। তৃণমূলই ওদের এনেছিল।’’ যদিও ওই বুথের তৃণমূল প্রার্থী সামসুদ্দিন মণ্ডলের দাবি, ‘‘ওই সব দুষ্কৃতীদের কারা নিয়ে এসেছে বলতে পারব না। বিষয়টি জানা নেই।’’ এ দিন আদালত থেকে বর্ধমানের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ধৃতদের মধ্যে এক জনের দাবি, ‘‘আমরা তৃণমূল করি। নেতাদের কথায় ওই গ্রামে গিয়েছিলাম। পুলিশ উদ্ধার না করলে আরও খারাপ হত।’’