মেলেনি জমি, ধসপ্রবণ এলাকাতেই চলছে স্কুল 

প্রশাসনিক জটিলতায় সরকারি জমি হাতে না আসায় স্কুল স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এর ফলে, বিপদের আশঙ্কা নিয়েই খুদেদের পড়াশোনা চলছে সালানপুরের পাহাড়গোড়ার প্রাথমিক স্কুলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

সালানপুরের পাহাড়গোড়ার প্রাথমিক স্কুল। নিজস্ব চিত্র

ধসপ্রবণ এলাকা থেকে স্কুল সরানোর জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মাসখানেক আগে সেই অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতায় সরকারি জমি হাতে না আসায় স্কুল স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এর ফলে, বিপদের আশঙ্কা নিয়েই খুদেদের পড়াশোনা চলছে সালানপুরের পাহাড়গোড়ার প্রাথমিক স্কুলে। জটিলতা কাটিয়ে কবে সমাধান হবে, নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারছে না কোনও পক্ষই।

Advertisement

সালানপুরের সামডি পঞ্চায়েতে খনিতে ঘেরা পাহাড়গোড়া গ্রামটি বেশ ধসপ্রবণ। সম্প্রতি ইসিএল কর্তৃপক্ষ পাহাড়গোড়া খনি সম্প্রসারণের কাজ শুরু করেছেন। গ্রামের প্রায় ৫৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। জমির দাম ও ক্ষতিপূরণ বাবদ তিন কোটি টাকা দিয়েছে ইসিএল। অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়েছে স্কুলটিও। বর্তমানে খনি সম্প্রসারণের কাজ পুরোদমে চলছে। ভূগর্ভে ডিনামাইটের বিস্ফোরণ হচ্ছে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাতে মাঝেমাঝে কেঁপে উঠছে স্কুলের মেঝে-দেওয়াল। মাটির তলা ফাঁপা থাকায় যে কোনও সময়ে ভবনটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষক, পড়ুয়া থেকে অভিভাবকদের।

ইসিএল কর্তৃপক্ষও বারবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে জায়গা খালি করে দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। স্কুলটি স্থানান্তরের জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে ‘নো-অবজেকশন’ ছাড়পত্র চেয়ে আবেদন করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিখিলচন্দ্র মাজি। তিনি জানান, ২২ নভেম্বর সেই ছাড়পত্র পেয়েছেন। তার পরেই তিনি পাহাড়গোড়া গ্রাম লাগোয়া অঞ্চলে কিছুটা খাস জমি চিহ্নিত করে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে সেটি স্কুলের নামে করে দেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু তার পরে আর কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ। নিখিলবাবু বলেন, ‘‘বিপজ্জনক ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে স্কুল চালিয়ে যেতে হচ্ছে। কবে এই সমস্যা মিটবে, জানি না।’’ ইসিএলের সালানপুর এরিয়া কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষা দফতর জমি খুঁজে দিলেই তাঁরা ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ ৩০ লক্ষ টাকার চেক স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেবেন।

Advertisement

জমিটি স্কুলের নামে দেওয়া হচ্ছে না কেন? সালানপুর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক শুভদীপ টিকাদার জানান, ওই এলাকায় ৬৭৩ নম্বর দাগে ১০ শতক খাস জমি আছে। এই জমি অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। যদি দেখা যায় জমি খালি পড়ে রয়েছে, তবে স্কুলের নামে করে দেওয়া হবে। খালি না থাকলে অন্য কোথাও জমির খোঁজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘আবেদনপত্র পাওয়ার পরে, একাধিক বৈঠক হয়েছে। দ্রুত সমাধান করা হবে।’’ চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের স্কুল পরিদর্শক প্রসেনজিৎ বারিকেরও আশ্বাস, ‘‘বিষয়টির দ্রুত সমাধান করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement