বাড়ি ফেরার সময়ে আচমকা দুর্ঘটনায় কোনও ক্রমে বেঁচেছিল প্রাণ। কিন্তু দু’টি হাতই বাদ যায় ছাত্রীর। পরে চিকিৎসকেরা জানান, কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করতে হবে। তারই খরচ জোগাড় করতে ছাত্রীটির পাশে দাঁড়াল তাঁর পুরনো স্কুল এমএএমসি মডার্ন হাইস্কুল।
দুর্গাপুরের বাসিন্দা সায়ন্তনী চট্টোপাধ্যায় বর্ধমানের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ইংরেজি অনার্সের ছাত্রী। ২০১৫-র ৪ জুন দিনটা এখনও মনে পড়ে চট্টোপাধ্যায় বাড়ির। আচমকা বাড়িতে খবর আসে, পরীক্ষা দিয়ে বা়ড়ি ফেরার পথে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে মেয়ের। কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে দীর্ঘ চিকিৎসার পরে সুস্থ হয়েছেন সায়ন্তনী। তবে দু’টি হাতই বাদ দিতে হয়।
চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, দুর্ঘটনা নিয়ে যেন কোনও প্রশ্ন না করা হয় সায়ন্তনীকে। সেই সঙ্গে বলা হয়, যদি কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করা যায়, তা হলে হয়তো কারও সাহায্য ছাড়াই পড়াশোনা ও দৈনন্দিন কাজের বেশির ভাগটাই করতে পারবেন ওই ছাত্রী। তবে তার জন্য খরচ হবে ২৭ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্ক শুনে মাথায় হাত সায়ন্তনীর বাবা পেশায় সরকারি কর্মচারী শিবদাসবাবুর। এরপরেই এগিয়ে আসে সায়ন্তনীর পুরনো স্কুল। শুরু হয় চাঁদা তোলা। শিক্ষক-পড়ুয়া মিলে জোগাড় করে ফেলেন ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সোমবার সেই টাকা দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরার মাধ্যমে সায়ন্তনীর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় স্কুলের তরফে।
ছাত্রীর পাশে দাঁড়াতে পেরে খুশি স্কুলের সকলেই। প্রধান শিক্ষক তরুণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সায়ন্তনী আমাদের স্কুল থেকেই গত বছর ৭৮ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। ওর সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করছি সকলে।’’ বাকি টাকা কী ভাবে জোগাড় হবে, সেই শঙ্কা নিয়েও শিবদাসবাবু বলেন, ‘‘স্কুল যে ভাবে এগিয়ে এসেছে তা বলার নয়।’’