Bardhaman Sanskriti Lok Mancha

সংস্কার হবে বর্ধমানের ‘সংস্কৃতি লোকমঞ্চ’

ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলার শিল্পীদের জন্য ছুটির দিনে প্রতি আড়াই ঘণ্টায় ভাড়া আগে ছিল ৭ হাজার টাকা। বাড়া গিয়ে তা লাগবে সাড়ে ৮ হাজার টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩৭
Share:

বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চ। নিজস্ব চিত্র।

প্রায় তিন দশক আগে বর্ধমানে সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্র হিসেবে সরকারি উদ্যোগে তৈরি হয় ‘সংস্কৃতি লোকমঞ্চ’। তা নিয়ে বার বার ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে যুক্ত মানুষের মধ্যে। অভিযোগ, প্রায় ১৪০০ দর্শকের বসার ব্যবস্থা থাকলেও অনেক চেয়ার ভাঙা। দীর্ঘ দিন নষ্ট পরে বাতানুকূল যন্ত্র। আবার হল বুক করতেও পোহাতে হয় বিশাল ঝক্কি। এত সব পরিকাঠামোগত সমস্যার মধ্যেই ভাড়াও বেড়েছে লোকমঞ্চের। তবে অবশেষে চলতি বছরের শেষেই সেটি সংস্কার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি।

Advertisement

জানা গিয়েছে, এই মঞ্চ ব্যবহারের ক্ষেত্রে জেলার শিল্পীদের জন্য ছুটির দিনে প্রতি আড়াই ঘণ্টায় ভাড়া আগে ছিল ৭ হাজার টাকা। বাড়া গিয়ে তা লাগবে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। সপ্তাহের অন্য দিনের ভাড়া ৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৭ হাজার করা হয়েছে। জেলার বাইরের শিল্পীদের জন্য ৩ ঘণ্টায় ছুটির দিনে ভাড়া ছিল ১০ হাজার ও অন্য দিন ৮ হাজার টাকা। এখন তা হয়েছে ১৩ হাজার ও সাড়ে ৯ হাজার টাকা। শহরের নাট্যদলগুলি এই মঞ্চ ব্যবহারের জন্য যে ছাড় মিলত, সেই ছাড়ও তুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

বুকিং নিয়েও নাজেহাল হতে হয় শিল্পীদের। জানা গিয়েছে, লোকমঞ্চ বুক করতে হলে প্রথমে জেলা পরিষদের কাছে আবেদন করতে হয়। এর পর সেখানে টাকা জমা দিয়ে মানি রিসিট পাওয়া যায়। সেই রিসিট নিয়ে যেতে হয় বর্ধমান থানায়। সেখানে জেলা প্রশাসনের অনুমতির জন্য ফের আবেদন করতে হয়। থানা সেই কাগজ পাঠিয়ে দেয় মহকুমাশাসকের দফতরে। মহকুমাশাসকের দফতরে যোগাযোগ করে সেখানে কাগজপত্র এলে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রধান শাখায় গিয়ে টাকা জমা করতে হয়। ব্যাঙ্কের রিসিভ কপি মহকুমাশাসকের দফতর আরএম সেকশনে জমা দিলে কিছু দিন পর সেখান থেকেই মেলে অনুমতিপত্র। এই জটিল পদ্ধতি নিয়ে ক্ষুব্ধ সাংস্কৃতিক কর্মীরা।

Advertisement

শহরের নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক উদয়শঙ্কর মুখোপাধ্যায় ও ধ্রুবজ্যোতি কেশরা বলেন, “সংস্কৃতি লোকমঞ্চ ছাড়া শহরে থিয়েটার করার মতো ভাল হল নেই। বাতানুকূল যন্ত্র ছাড়া ভিতরে দম বন্ধ পরিস্থিতি হয়। বাইরে থেকে বাতানুকূল যন্ত্র ভাড়া করে আনা হলে তার জন্য বাড়তি খরচ দিতে হয় প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষকে। এত অসুবিধার পরেও যদি লোকমঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হয়, ছাড় তুলে দেওয়া হয়, জেলার থিয়েটার চর্চার উপর এর প্রভাব পড়বে।” সাংস্কৃতিক কর্মী শিবোতোষ বোস বলেন, “সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলির হাল এমনতেই খারাপ। তার উপরে ভাড়া বৃদ্ধি, হল পেতে সমস্যা। এই বিষয়গুলি সরল করলে সকলের সুবিধা। সংস্কার যখন শুরু হবে, সে সময় মঞ্চে আলো লাগানোর বারগুলির অবস্থানও ঠিক করা দরকার। তাতে যেন অভিজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়।”

জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, “প্রাথমিক ভাবে কথা হয়েছে অক্টোবর থেকে এই প্রেক্ষাগৃহে কোনও অনুষ্ঠানে রাখা হবে না। এই সময় থেকেই হলের সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement