এক জনের বহু টোটো রুখতে এ বার লাইসেন্স

টোটোয় রাশ টানতে এ বার ‘রুট পারমিটে’র বদলে ‘রুট লাইসেন্স’ দিতে চলেছে পুরসভা। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কর্তাদের দাবি, গাড়ির মালিকদের নামেই লাইসেন্স দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৬ ০২:০৭
Share:

টোটোয় রাশ টানতে এ বার ‘রুট পারমিটে’র বদলে ‘রুট লাইসেন্স’ দিতে চলেছে পুরসভা। আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের কর্তাদের দাবি, গাড়ির মালিকদের নামেই লাইসেন্স দেওয়া হবে। তার ফলে টোটোর মালিক আর চালককে একই ব্যক্তি হতে হবে। এতে একাধিক টোটো কিনে ব্যবসা করার প্রবণতাও যেমন কমবে, তেমনি টোটো চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনা যাবে বলেও কর্তাদের ধারণা। যদিও টোটোর ভিড়ে আটকে থাকা শহরের দুর্ভোগ কমবে কি না তার সদুত্তর নেই কারও কাছে।

Advertisement

ওই পরিবহণ দফতরের সহকারী আধিকারিক সুরজিৎকুমার দাস বলেন, “রুট পারমিটের পরিবর্তে রুট লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গাড়ির মালিকের নামেই রুট লাইসেন্স দেওয়া হবে।” জানা গিয়েছে, স্রেফ বর্ধমান শহরেই টোটো রয়েছে ৩১৫৮টি। গত বছর নভেম্বরে একটি বৈঠকে টোটোগুলিকে সুনির্দিষ্ট ভাবে চালানোর জন্য বর্ধমান জেলা প্রশাসন ৭৩টি রুট ঠিক করেছিল। টোটোর রেজিস্ট্রেশন ও রুট-পারমিট দেওয়ার কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু তারপর পুরো প্রক্রিয়াটাই হঠাৎ করে থমকে যায়। মাস খানেক আগে ফের টোটোগুলিকে টেম্পরারি আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিন) দেওয়া হয়।

কিন্তু হঠাৎ করে প্রক্রিয়া বন্ধই বা হল কেন, আবার নম্বর দেওয়ার কাজই শুরু করার কারণ কী?

Advertisement

জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যায়, দু’মাস আগে সুপ্রিম কোর্ট টোটোকে পারমিট দেওয়ার বদলে চালকদের লাইসেন্স দেওয়ার নির্দেশ দেয়। রাজ্য সরকার ওই নির্দেশের সঙ্গে চালকদের রুট-লাইসেন্স দেওয়ারও নির্দেশ দেয়। দফতরের আধিকদের মতে, রুট-লাইসেন্স দেওয়ার জন্য টোটো গাড়ির সংখ্যা নির্দিষ্ট ভাবে বাড়ানো বা কমানো যাবে। ফলে একই রুটে টোটোর ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা কম। জেলা সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, “আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের সহকারী আধিকারিকের নেতৃত্বে ৬ জনের একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। ওই কমিটিই রুট বাড়ানো বা কমানো, বেআইনি টোটোর দৌরাত্ম্য-সহ পুরো বিষয়টি দেখবে।” এর আগে বর্ধমান শহরে প্রতিটি রুটে দিনে ২০টি ও রাতে ২০টি করে মোট ৪০টি টোটো চালানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। এখন ঠিক হয়েছে, দু’বেলায় ২৪টি করে প্রতিটি রুটে টোটো চালানোর জন্য অনুমতি দেওয়া হবে। তবে চাহিদা মেনে কোথাও বেশি বা কম টোটো চালানো যেতে পারে বলেও ঠিক করা হয়েছে।

পরিবহণ দফতরের দাবি, শহরের ৪০ শতাংশ টোটোই সরকারি নির্দেশিকা মেনে তৈরি নয়। বর্ধমান বা আশেপাশের স্থানীয় লেদ কারখানা থেকে তৈরি সেগুলির বেশির ভাগ। ফলে ওই সব টোটোকে সরকারি ভাবে অনুমোদন দিতে পারবে না রাজ্য সরকার। দফতরের এক কর্তার দাবি, “রাজ্য স্তরে দুটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা। ওই দুটি সংস্থা ওই টোটোগুলি কিনে নিয়ে বাজারের থেকে কম দামে মালিকের হাতে টোটো তুলে দেবেন।”

তবে শহরের বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ফি বছর শুধু বৈঠক করে সিদ্ধান্তই নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু টোটোর দৌরাত্ম্য কমছে কই? টোটোর দাপটে রাস্তায় হাঁটাচলা দায় বলেও তাঁদের দাবি। যদিও দুর্ভোগ কবে কমবে সে উত্তর নেই কারও কাছে। বর্ধমানের পুরপিতা পরিষদের সদস্য খোকন দাস বলেন, “পুরসভা নয়, টোটো সংক্রান্ত পুরো বিষয়টি দেখবে জেলা আঞ্চলিক দফতর।” আর আঞ্চলিক দফতরের কর্তাদের দাবি, কিছুটা সময় তো লাগবেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement