‘সিদ্ধেশ্বরী মার্কেট’ এলাকায় এমন জল নিয়েই বিপত্তি। নিজস্ব চিত্র
পুরসভার পানীয় জলের লাইনে মিশছে নর্দমার জল। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই ঘোলা জল আসছে। পুরসভাকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি। এমনই অভিযোগ দুর্গাপুরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মামরা বাজার লাগোয়া ‘সিদ্ধেশ্বরী মার্কেট’ এলাকার বাসিন্দাদের। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে পুরসভা।
এলাকাবাসী নারায়ণ সাহা বলেন, “মাস দুয়েক ধরে এই পরিস্থিতি। নর্দমার জল পানীয় জলের লাইনে মিশে এই অবস্থা বলে মনে হচ্ছে। প্রথম দিন না জেনে ওই জলই পান করায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।” স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা সাহা জানাচ্ছেন, জল মেলে না। পেলেও নোংরা ঘোলা জল। কোনও কাজে লাগে না। মাঝেমাঝেই পুরসভার কর্মীরা খোঁড়াখুঁড়ি করে চলে যান। কিন্তু কোনও ফল হয় না। উল্টে রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অথচ নিয়মিত জলকর দেন এলাকাবাসী। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, জলের রং কালচে। জল থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পুরসভার জল স্নানের জন্য ব্যবহার করে অনেকের ত্বকের সমস্যা হয়েছে। তাঁরা জানান, পানীয় জল কিনতে হচ্ছে। দৈনন্দিন নানা ব্যবহারের জলও পাওয়া যাচ্ছে না। ঘরদোর অপরিচ্ছন্ন থাকছে দিনের পর দিন। স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু দাস বলেন, “জলকর দিচ্ছে আমরা। অথচ জল মিলছে না। এটা ঘোর অন্যায়। এর প্রতিকার চাই।”
এই এলাকাতেই থাকেন তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি যুথিকা কর্মকার। দিনের পর দিন এই পরিস্থিতিতে তাঁকেও ভুগতে হচ্ছে। তা ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে বার বার অভিযোগ পেয়ে তিনি বিব্রত। তিনি বলেন, “আমি লিখিত ভাবে বিষয়টি পুরসভায় জানিয়ে এসেছি। এমনকি, পুরসভায় জলের নমুনাও নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দুর্গন্ধময় জল। কলে জল আসার সময় দুর্গন্ধের চোটে পাশে থাকা যাচ্ছে না।” তাঁর দাবি, তাঁদের চার জনের পরিবারে প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকার জল কিনে খেতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, “আসলে সরকারের নাগরিক পরিষেবা নিয়ে ভাবার সময় নেই।”
জল দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহা জানান, তিনি নিজে শুক্রবার এলাকায় গিয়েছিলেন। একটি বাড়ি থেকে জলের নমুনা সংগ্রহ করে দেখেছেন, জল ঘোলা। তবে একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাইপলাইনের জল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, তা স্বচ্ছ। দীপঙ্কর বলেন, “গত পাঁচ দিন ধরে জল দফতরের কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি করে কোথায় সমস্যা তা খোঁজার চেষ্টা করছেন। আশা করছি, দু’-এক দিনের মধ্যেই সমস্যারসমাধান হবে।”