প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মিনিবাস পরিষেবা। তার পরে কেটে গিয়েছে বহুদিন। পরিষেবা আর শুরু হয়নি। বিপাকে দুর্গাপুরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ারিয়া ও লাগোয়া এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। বেশি ভাড়া দিয়ে মোটর-ভ্যান বা টোটো-য় চড়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অবিলম্বে পরিষেবা শুরুর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওয়ারিয়া স্টেশন লাগোয়া কয়েকটি বস্তি এলাকা রয়েছে। অধিকাংশ মানুষ দিনমজুরি করে সংসার চালান। ওই সব এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য মায়াবাজার, বেনাচিতি, নেপালিপাড়া প্রভৃতি এলাকায় যেতে হয়। এই এলাকা থেকে শ’খানেক পড়ুয়াকে প্রতিদিন অন্যত্র যাতায়াত করতে হয়।
ওয়ারিয়া স্টেশন থেকে দুর্গাপুর স্টেশন, বেনাচিতি প্রভৃতি রুটে প্রায় ছ’টি মিনিবাস চলত এক সময়। করোনা অতিমারির সময়ে বন্ধ হয় পরিষেবা। পরে লকডাউন উঠে গেলেও আর মিনিবাস পরিষেবা চালু হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এলাকাবাসী প্রকাশ সাউ, নিমাই গিরিরা বলেন, “শহরের সব রুটেই মিনিবাস চলছে। শুধু আমাদের রুটে বন্ধ রয়েছে। যাতায়াতে ভাড়া ও সময়, দু’টোই খুব বেশি লাগছে।”
এই এলাকাটি থেকে মায়াবাজারের দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার। বিপজ্জনক ভাবে পড়ুয়াদের কেউ-কেউ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা ডাম্পার বা ট্রাকে চড়ে যাতায়াত করতে বাধ্য হন বলে জানা গিয়েছে। মোটর ভ্যানে উঠলে ভাড়া লাগে গড়ে ১৫ টাকা। এখানকার বাসিন্দাদের নানা প্রয়োজনে দুর্গাপুর স্টেশন, বেনাচিতি, সিটি সেন্টার-সহ শহরের অন্য জায়গায় যাতায়াত করতে হয়। তাঁরাও সমস্যায় পড়েন। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মায়াবাজার শাখার সভাপতি বিনোদ বার্নওয়াল বলেন,“ওয়ারিয়া থেকে আর মিনিবাস চলে না। অথচ এখানকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন কাজে প্রায়ই বাইরে যেতে হয়। দ্রুত পরিষেবা চালুহওয়া দরকার।”
দুর্গাপুর পুরসভার ৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় কাউন্সিলর লোকনাথ দাস জানেন সমস্যার কথা। তিনি বলেন, “করোনা অতিমারির জন্য মিনিবাস পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। ফের যাতে পরিষেবা চালু হয় সে জন্য কথা হয়েছে মিনিবাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে। আবারও যোগাযোগ করব।” যদিও দুর্গাপুরের অন্যতম মিনিবাস মালিক সংগঠন ‘দুর্গাপুর প্যাসেঞ্জার ক্যারিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক কাজল দে বলেন, “ভাড়া না বাড়ানো, অটো-টোটোর দৌরাত্ম্য-সহ নানা কারণে মিনিবাসের আয় তলানিতে ঠেকেছে। কোনও রকমে পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। বিভিন্ন চালু রুটেই মিনিবাসের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। মায়াবাজার পর্যন্ত মিনিবাস চলছে। তবে ওয়ারিয়া পর্যন্ত কবে মিনিবাস চলাচল করবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”