আসানসোল আপকার গার্ডেনের পুজো মণ্ডপ। নিজস্ব চিত্র।
ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির তিন মহাশক্তিকে চাক্ষুষ করতে গেলে এখানে আসতে হবে। পুরাণ-শাস্ত্রের জগৎ থেকে বেরিয়ে এক চিলতে তাইল্যান্ড দেখারও সুযোগ রয়েছে। শ্যামা মায়ের আরাধানা উপলক্ষে এ ভাবেই দর্শকের সামনে বিভিন্ন থিম হাজির করতে চেয়েছেন আসানসোল-বার্নপুরের পুজোর উদ্যোক্তারা।
বার্নপুরের রামবাঁধ ইয়ং মেনস ক্লাবের মণ্ডপে এ বার থাকছে ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর— এই তিন মহাশক্তির আরাধনা। শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইলা জানান, গাছ, পাহাড়, তালপাতার পাখা, উলের বুনট প্রভৃতি মডেল ও উপকরণে মণ্ডপসজ্জা প্রস্তুত করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের দাবি, ৫৫ বছরে পা দেওয়া এই পুজোয় দর্শকদের চোখ টানতে থাকছে চন্দননগর থেকে আনা আলোকসজ্জাও। পুজো কমিটির তরফে পুফা বসাক জানান, পুজোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও রয়েছে।
পুরাণ-শাস্ত্রের জগৎ ছাড়িয়ে বৌদ্ধ দর্শনের সান্নিধ্য এনে দিতে চেয়েছে ৪৬ বছরে পা দেওয়া বার্নপুরের রাজস্থান ক্লাব। অ্যালুমিনিয়াম পাত আর তারজালি দিয়ে তৈরি মণ্ডপটির আদল তাইল্যান্ডের বৌদ্ধ মন্দিরের মতো। শিল্পীদের দাবি, মহাশক্তির আরাধনায় সম্মান জানানো হয়েছে বিশ্বশান্তির প্রতীক বুদ্ধদেবকেও।
দেশের শহিদ জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানাতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বার্নপুরের ৮ নম্বর নয়াবস্তির আজাদ হিন্দ ক্লাবের উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তারা জানান, মণ্ডপটি প্রায় ৭০ ফুট উঁচু। শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে মন্দিরের মাথায় থাকা গম্বুজে দিনভর জ্বলবে প্রদীপ।
গৃহস্থের ঘরে ভরে উঠুক শস্য গোলা— দেবী আরাধনার মাধ্যমে এমনই আবেদন জানিয়েছে আসানসোলের সবুজ সঙ্ঘ। মণ্ডপে রয়েছে আস্ত একটি গ্রাম। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে ধানের শিষ ও খড়। ধানের গোলা, সাধক রামপ্রসাদ, আটচালা প্রভৃতির মাধ্যমে সেজেছে মণ্ডপটি। প্রতিমাটি তৈরি হয়েছে আদ্যাপীঠের মূর্তির আদলে। পুজো উপলক্ষে থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
থিমের লড়াইয়ে যাননি আসানসোলের আপকার গার্ডেন সর্বজনীন পুজো কিমিটির উদ্যোক্তারা। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ তিন দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।