বর্ধমান স্টেশনে বিক্ষোভ। শনিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম, পতাকা, টর্চ-সহ জরুরি জিনিসপত্র রাখার জন্য গার্ডের কামরাতেই স্থায়ী বাক্সের ব্যবস্থা করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ। তাতে আপত্তি তুলে শনিবার বর্ধমানে বিক্ষোভ দেখালেন গার্ড থেকে কুলিরা। তার জেরে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। বিপাকে পড়েন যাত্রীরা।
রেল সূত্রে জানা যায়, ট্রেন চালুর সময় থেকে গার্ডের কামরায় একটি বাক্স রাখা থাকে। সেখানে পতাকা, আলো-সহ নানা জরুরি জিনিস থাকে। গন্তব্যস্থলে ট্রেন পৌঁছনোর পরে দায়িত্বে থাকা গার্ড কুলির মাধ্যমে ওই বাক্সটি নিয়ে চলে যেতেন। নতুন গার্ড এলে কুলির মাধ্যমেই ওই বাক্স ট্রেনে তুলতেন। এটি রেলের পরিভাষায় ‘সেফটি-সিকিউরিটি’ বাক্স বলে পরিচিত। প্রায় দু’বছর আগে রেল ইএমইউ ট্রেনে অস্থায়ী বাক্স ব্যবস্থা তুলে দিয়ে যাত্রী পরিষেবা আরও দ্রুত করার জন্য স্থায়ী বাক্স রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই মতো ওই সব ইএমইউ ট্রেনের গার্ডের কামরায় স্থায়ী বাক্সও বসানো হয়। কিন্তু গার্ডেদের আপত্তি ও বাক্স ঘিরে থাকা ‘বক্স পোর্টার’দের আন্দোলনের জন্য তা চালু করা যায়নি। শুক্রবার রাতে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশন গার্ডের কামরায় স্থায়ী বাক্স ব্যবহারের নির্দেশিকা জারি করেন।
শনিবার সকাল থেকে হাওড়া স্টেশনে বিক্ষোভ শুরু হয়। তার জের পড়ে বর্ধমানেও। গার্ড ও কুলিদের একাংশ বিক্ষোভে সামিল হন। গার্ডেদের দাবি, যাত্রী পরিষেবা দ্রুত করতে গিয়ে এই ব্যবস্থা চালু করলে আদতে পরিষেবা বিঘ্নিত হবে। কারণ, একটি ট্রেন বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করে। প্রতিটি রুটে পৃথক গার্ড থাকেন। স্থায়ী বাক্সের জিনিসপত্র হস্তান্তর করতে গিয়েই অনেকটা সময় চলে যাবে।” কুলিরা জানান, ওই বাক্স তোলা-নামানো করে তাঁরা জীবিকা নির্বাহ করেন। নতুন ব্যবস্থায় তাঁদের কাজ হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
ইস্টার্ন রেলওয়ে মেন’স ইউনিয়নের বর্ধমানের সম্পাদক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এই ব্যবস্থা চালু হলে সকলের খুব সমস্যা হবে। সে জন্য সকালের দিকে বিক্ষোভ হয়েছিল। তবে যাত্রী পরিষেবার কথা মাথায় রেখে আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়।” যদিও রেলের দাবি, শুধুমাত্র ইএমইউ ট্রেনে এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। তাতে কুলিদের কাজ হারানোর কোনও আশঙ্কা নেই।
হাওড়াতেও বিক্ষোভের জন্য বর্ধমান স্টেশনে বেশ কিছু লোকাল ট্রেন ঠিক সময়ে ঢুকতে পারেনি। ফলে, ট্রেন বাতিল ও সময়সূচি পরিবর্তন করতে হয়েছে। আচমকা এমন ঘটনায় তাঁদের ভুগতে হয়েছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। বর্ধমানের স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী বলেন, “ট্রেন কম থাকার জন্য বর্ধমান-ব্যান্ডেল লোকাল বাতিল ও দুটি ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করতে হয়েছে।”