ডিএসপি-র উচ্ছেদের নোটিসে
Accidental Death

দোকান সরাতে গিয়ে চাপা পড়ে মৃত্যু, বিক্ষোভ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপির তরফে অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে টাউনশিপের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চলছে। প্রথমে দোকানপাট বা নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৭
Share:

এখানেই দুর্ঘটনা। —নিজস্ব চিত্র।

ডিএসপির উচ্ছেদের নোটিস পেয়ে মঙ্গলবার সকালে দোকান সরাতে গিয়েছিলেন দোকান মালিক। দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হল তাঁর। পরিজনেরা এই ঘটনার জন্য ডিএসপি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে দুর্গাপুর থানার সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান। পরিবারের এক জনের চাকরি এবং বিকল্প ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা যাবে না, এই দাবি তুলে পরিবারের পাঁশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপির তরফে অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে টাউনশিপের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চলছে। প্রথমে দোকানপাট বা নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়। সময়সীমা পেরোনোর পরে যন্ত্র দিয়ে ভেঙে ফেলা হয় নির্মাণ। ডিএসপি টাউনশিপের এ-জ়োনের অশোক অ্যাভিনিউয়ে প্রায় দু’দশকের পুরনো চায়ের দোকান ছিল ধোবিঘাটের বাসিন্দা সমীর চক্রবর্তীর (৪৭)। সম্প্রতি ওই এলাকায় ডিএসপির তরফে মাইকে প্রচার করে অবৈধ দোকানপাট সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সমীরের দোকানও ডিএসপি-র জায়গায় থাকায় তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েন। মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির মধ্যেই দোকান সরানোর কাজ শুরু করেন তিনি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, দেওয়াল থেকে ইট খুলে নেওয়ার সময়ে আচমকা দেওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়ে তাঁর উপর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে দেহ নিয়ে থানায় যান পরিবারের লোকজন। বিক্ষোভ দেখান সেখানে। তাঁর ছেলে বাবলু চক্রবর্তীর দাবি, পরিবারের এক জনকে চাকরি দিতে হবে। উচ্ছেদ বন্ধ করতে হবে দুর্গাপুর স্টিল প্লান্ট কর্তৃপক্ষকে। তিনি বলেন, “ডিএসপি কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদের আতঙ্কে আমার বাবার এই পরিণতি হল।” থানায় গিয়ে তাঁদের পাশে দাঁড়ান তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের নেতা পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, ‘‘আমরা পরিবারের পাশে আছি। দলের তরফে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। পরিবারটির রোজগার বন্ধ হয়ে গেল। ডিএসপি কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা পরিবারের এক জনের চাকরি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। কর্তৃপক্ষকে উচ্ছেদ করার আগে বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে।’’

Advertisement

বিজেপির দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানান, তাঁরা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে উচ্ছেদের পক্ষে। তিনি বলেন, “এডিডিএ ইতিমধ্যে বহু দোকানপাট ভেঙে দিয়েছে। বহু মানুষ দুর্গাপুজোর আগে রোজগারহীন হয়ে পড়েছেন। তৃণমূলের কোনও নেতা তাঁদের পাশে নেই। আমরা তাঁদের নিয়ে আন্দোলন করছি। এখন তাঁদের ভুল বোঝাতে ডিএসপি-র বিরুদ্ধে সুর চরিয়ে নাটক করছেন ওঁরা। এই দ্বিচারিতা মানুষ মানবেন না।” অভিযোগ উড়িয়ে পঙ্কজের বক্তব্য, “যে কোনও ধরনের উচ্ছেদের ক্ষেত্রেই পুনর্বাসনের আগাম পরিকল্পনা থাকা উচিত, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ আশ্বস্ত হতে পারেন। রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী মানবদরদি। তাই রাজ্যের বিষয় নিয়ে বিজেপিকে ভাবতে হবে না। ওরা বরং ডিএসপিকে পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়ে চাপ দিক।”

ডিএসপি সূত্রে জানানো হয়েছে, নিয়ম মেনেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়ে থাকে। পুনর্বাসন বা মৃতের পরিবারকে চাকরির দাবি নিয়ে সংস্থার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement