সুন্দলপুরে গ্রামে বিক্ষোভ গ্রামবাসীর একাংশের। ছবি: কাজল মির্জা
সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে গলসি ২ ব্লকের চৌমাথা থেকে গোহগ্রাম পর্যন্ত রাস্তা। বালি বোঝাই গাড়ি চলাচলের জেরে হাল আরও খারাপ হচ্ছে, অভিযোগ বাসিন্দাদের একাংশের। রাস্তা সারানোর দাবিতে শনিবার সকালে সুন্দলপুর গ্রামে বালি বোঝাই গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বেশ কিছু বাসিন্দা। গলসি ১ ব্লকের পারাজ গ্রামের কিছু বাসিন্দা রাস্তা বাঁচাতে অতিরিক্ত বালি বোঝাই ট্রাক আটকে, তা থেকে বালি নামিয়ে প্রতিবাদ জানানো শুরু করেছিলেন শুক্রবার। এ দিনও তা চলে।
গলসি থেকে গোহগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার রাস্তায় দিনে গড়ে শ’তিনেক বালির গাড়ি ও ২৫টি বাস চলে। বাসের চালকেরা জানান, রাস্তা এত খারাপ যে গোহগ্রাম থেকে গলসি যেতে প্রায় দু’ঘণ্টা সময় লাগছে। সুন্দলপুরের বাসিন্দা শেখ রেজাউল, মাখন মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘রাতবিরেতে কারও অসুখ হলে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। প্রসূতিদের নিয়ে দুর্ভোগ হয়।’’
স্থানীয় সূত্রের দাবি, এ দিন সুন্দলপুরে শ’খানেক বালির গাড়ি আটকে পড়ে। পুলিশ গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ থামে। সুন্দলপুরের বাসিন্দা বুড়ো মোল্লা, শেখ রফিকদের অভিযোগ, ‘‘এই রাস্তার উপরে নির্ভরশীল প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষ। বছর দু’য়েক আগে রাস্তায় কাজ শুরু হলেও কিলোমিটার দু’য়েক সংস্কার করেই বরাত পাওয়া সংস্থা চলে যায়। গোটা রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি। রাস্তা সংস্কার ও বালির গাড়ি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।’’ তবে অন্য সব গাড়িই ছেড়ে দেওয়া হচ্ছিল বলে তাঁদের দাবি।
গলসি ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরীর আশ্বাস, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি ওই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে। রাস্তাটি নতুন করে তৈরির পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।”
শুক্রবারের পরে শনিবারও গাড়ি থেকে বালি নামিয়ে প্রতিবাদ জানান গলসি ১ ব্লকের পারাজ গ্রামের কিছু বাসিন্দা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, ‘ওভারলোড’ করে ছুটে যাওয়া গাড়ি বন্ধের প্রতিশ্রুতি যতক্ষণ না মিলছে, এই প্রতিবাদ চলবে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিল্ল্যা ও সোদপুর এলাকার দামোদরের খাদান থেকে কয়েকশো ট্রাক বালি বোঝাই করে শিল্ল্যা-পারাজ রাস্তা দিয়ে এসে পারাজের মোড়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, বেশিরভাগ গাড়িই বহন ক্ষমতার থেকে অনেক বেশি মাল নিয়ে যাতায়াত করছে। তাতে রাস্তা, কালভার্ট, সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু দিন আগে পারাজের কাছে একটি কালভার্ট ভেঙে গিয়েছিল বলেও অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা গোলাপ মল্লিক, শেখ জিন্নাতদের। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবাদ চলবে।
বিএলএলআরও (গলসি ১) মিন্টু বালা অবশ্য বলেন, ‘‘আমি পারাজে গিয়েছিলাম। বেআইনি কিছু পাওয়া যায়নি।’’