‘দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)। ফাইল চিত্র।
উৎপাদনহীন হয়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ‘দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড’ (ডিপিএল)। কয়লার অভাবে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে এই পরিস্থিতি হয়েছে দাবি কর্তৃপক্ষের। দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
দুর্গাপুর ও সংলগ্ন এলাকার বিভিন্ন শিল্প-সংস্থা ও বাড়িতে বিদ্যুতের জোগান দিতে ১৯৬০-এ ডিপিএল গড়ে তোলে রাজ্য সরকার। আটটি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে শুধু ৩০০ মেগাওয়াটের সপ্তম এবং ২৫০ মেগাওয়াটের অষ্টম ইউনিট চালু আছে। ডিপিএলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লার অভাবে বেশ কিছুদিন ধরেই সপ্তম ও অষ্টম, দু’টি ইউনিট সব সময় এক সঙ্গে পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে, উৎপাদিত বিদ্যুতে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটে যাচ্ছে বলে দাবি।
ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রীষ্মের সময়ে শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় তিনশো মেগাওয়াট। সমস্যা বাড়ে মঙ্গলবার গভীর রাতে। কয়লার অভাবে দু’টি ইউনিটই বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র বলেন, ‘‘সাময়িক একটা সমস্যা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে।”
এ দিকে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। বিরোধীদের অভিযোগ, ডিপিএলের হাতে রয়েছে বাঁকুড়ার বড়জোড়ায় ‘ট্রান্স দামোদর’ কয়লাখনি। কিন্তু নানা কারণে সেই খনি পুরোদমে চালু করতে পারেনি সংস্থা। তা ছাড়া সেখান থেকে কয়লা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া, কোল ইন্ডিয়ার কাছেও কয়লা কিনে থাকে ডিপিএল। বিএমএস অনুমোদিত ডিপিএলএমএসের যুগ্ম সম্পাদক অর্কপ্রভ রায়ের দাবি, “এখন বর্ষার সময় নয়। ফলে, কয়লার জোগান কম থাকার কথা নয়। পরিকল্পনা করে বাইরের সংস্থার কাছে কয়লা কেনার জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে।” ডিপিএলের সিটু নেতা নরেন সিকদারের প্রশ্ন, “এমন পরিস্থিতি এক দিনে হয় না। কেন আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? নিজস্ব খনি থাকতেও, বাইরের সংস্থার কাছে কয়লা কেন কিনতে হবে? শাসক দলের নেতাদের সুবিধা করে দিতেই কী এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হল?” অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাস্তব পরিস্থিতি না বুঝে, সব কিছুতেই রাজনীতি খুঁজতে গিয়ে এই অবস্থা ওঁদের।”