কোমলপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের তদন্তে নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। অভিযোগের ব্যাখ্যা চেয়ে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছেন আবাস প্রকল্পের তদন্তে আসা কেন্দ্রীয় অনুসন্ধান দলের সদস্যেরা। শুক্রবার বর্ধমান ১ ব্লকের সরাইটিকর পঞ্চায়েতের কোমলপুর, আমড়া ও পালিতপুর গ্রামে ঘোরার সময়ে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে নিয়েই ঘোরেন তাঁরা। ওই কর্মীদের এই কাজের প্রশিক্ষণ ঠিক মতো হয়নি বলেও দাবি করেন প্রতিনিধি দলের এক সদস্য। বিডিও (বর্ধমান ১) অভিরূপ ভট্টাচার্যের যদিও দাবি, ‘‘বর্ধমান ১ ব্লক ঘুরে সন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় দল। আশাকর্মীদের কাজ নিয়েও সন্তুষ্ট তাঁরা।’’
এ দিন সার্কিট হাউস থেকে বেলা ১০টা নাগাদ কামনাড়ায় বর্ধমান ১ ব্লক দফতরে যায় অনুসন্ধানী দলটি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আলোচনা চলে সেখানে। বিভিন্ন রকমের নথিও দেখেন তাঁরা। গ্রামে পরিদর্শনে যেতে যোগ্য হওয়ার পরেও আবাস যোজনায় বাড়ি পাননি বলে তাঁদের কাছে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন। কোমলপুরের রাইমা বেগম নামে এক মহিলা অভিযোগ করেন, বিজেপি করার জন্যই তাঁদের নাম আবাস তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের দলটিকে বাড়ি দেখতে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। দলের সদস্যেরা গিয়ে দেখেন, ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া মাটির দোতলা বাড়ি। নীচের তলা বসবাসের অনুপযুক্ত। অস্বস্তিতে পড়েন বিডিও। গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখবেন বলে কেন্দ্রীয় দলকে জানান তিনি।
ওই গ্রামে আরও ১৪টি বাড়ি ঘুরে দেখেন ওই দলের সদস্যেরা। তালিকায় নাম থাকা এবং না থাকা দু’ধরনের বেশ কয়েকজন উপভোক্তার বাড়ি ঘোরা হয়। কেন নাম রয়েছে বা বাদ গিয়েছে, দুটোরই ব্যাখ্যা চান তাঁরা। তবে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের ব্যাখ্যায় সন্তূষ্ট হননি তাঁরা। আবাস সংক্রান্ত বিষয়ে ওই কর্মীদের প্রশিক্ষণ ঠিক মতো হয়নি বলেও মন্তব্য করেন এক সদস্য। বিডিও-র কাছে তাঁরা জানতে চান, কী রকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পাকা বাড়ি সম্পর্কে ওই কর্মীদের কোনও ধারণা নেই বলেও দাবি করেন প্রতিনিধিরা।
উপভোক্তাদের কাছে সমীক্ষা পদ্ধতি নিয়েও খোঁজ করা হয়। আশা বা অঙ্গনওয়াড়িরা সমীক্ষা করতে এসেছিলেন কি না, কী কী প্রশ্ন করা হয়, তা জানতে চান ওই দলের সদস্যেরা। তবে পরিদর্শন শেষে কোনও বিষয় নিয়েই মন্তব্য করতে চাননি তাঁরা। এ দিন সন্ধ্যায় সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে কী কী গোলমাল তাঁদের চোখে ধরা পড়েছে, তার প্রাথমিক তথ্য তাঁরা তুলে ধরেন বলে জানা গিয়েছে।
বিজেপি নেতা মৃত্যঞ্জয় চন্দ্রের দাবি, ‘‘সরকারি প্রকল্প নিয়ে কী ভাবে তৃণমূল নয়ছয় করে সাধারণ মানুষই তা বলছেন।’’ তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের পাল্টা দাবি, ‘‘কোথাও দুর্নীতি হয়নি। প্রশাসন তাদের কাজ করছে।’’