ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ধরে আবাস যোজনার চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে নির্দিষ্ট পোর্টালে ‘আপলোড’ এখনও হয়নি জেলায়। ওই তালিকা তৈরি করতে দিনভর পরিশ্রম করছেন জেলা পরিষদের কর্মী-আধিকারিকদের। এর মধ্যেই, ব্লক ধরে চলতি আর্থিক বছরের (২০২২-২৩) জন্য বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দিল রাজ্য। তবে চারটি ব্লকের উপভোক্তার তালিকা নিয়ে ‘আপত্তি’ জানিয়ে লক্ষ্যমাত্রা বদলের আর্জি জানিয়েছে জেলা পরিষদ। প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (আবাস প্লাস) প্রথম ধাপে জেলায় ৫২,৯৫০টি বাড়ির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে রাজ্য। কোন ব্লকে কত বাড়ি তৈরি হবে, তা-ও জানানো হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ২৩টি ব্লকের মধ্যে ২২টি ‘আবাস প্লাস’-এর অনুমোদন পাবে। গলসি ২ ব্লকে এক জন উপভোক্তারও নাম নেই। গলসির মতো না হলেও, আউশগ্রাম ১, কাটোয়া ২, পূর্বস্থলী ১ ও ২ ব্লকের তালিকায় থাকা সব উপভোক্তার নাম পোর্টালে না থাকায় অনেকে আবাস প্রকল্পের অনুদান থেকে আপাতত ‘বঞ্চিত’ থাকছেন। জেলা পরিষদ সূত্রের দাবি, ওই সব ব্লকে খুব কম সংখ্যক উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির অনুদান দিতে হবে। সেখানেও দু’তিন জন উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, “জেলা পরিষদ এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। ওই সব ব্লকগুলি যাতে তাদের সব উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির অনুদান দেয়, সে জন্য বলা হয়েছে।’’ প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়, গ্রামসভায় অগ্রাধিকার তালিকার অনুমোদন হয়ে গিয়েছে। সেগুলি ‘আপলোড’ করার কাজ চলছে। ওই তালিকা ধরে অনুমোদন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। তা হলেই বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট’ (পিডব্লিউএল) থেকে সমীক্ষা করে জেলায় ২,২৬,৮৯০ জনের নাম আবাস তালিকায় রাখা হয়। বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষার পরে মূল তালিকা থেকে ২৫-৩০% উপভোক্তার নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবাস তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া, তার পরে বাড়ি তৈরির ‘কোটা’ মেলার পরেও একটি বড় সংখ্যক উপভোক্তা বাকি থাকবেন। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, “আর্থিক অনুদান পাওয়ার ১০০ দিনের মধ্যে লক্ষ্যমাত্র মতো বাড়ি তৈরি শেষ হয়ে গেলে, ফের নতুন ‘কোটা’ আসবে। তা ছাড়া, আগামী পাঁচ বছরের জন্য এই তালিকা তৈরি হয়েছে। এক বছরে তো সবাই বাড়ির অনুমোদন পাবেন না।’’
আবাস প্লাসের উপভোক্তা তালিকা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। বিজেপি নেতা ভীষ্মদেব ভট্টাচার্যের দাবি, “কেন্দ্রের টাকা যোগ্যদের দিতে হবে। কোনও ভাবেই তৃণমূল স্বজনপোষণ যাতে করতে না পারে, আমাদের নজর রয়েছে।’’ সিপিএমের অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “কোন কোন অনুপযুক্ত অনুদান পাচ্ছেন, সে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’’ তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী উপযুক্তদেরই বাড়ির অনুদান দিতে বলেছেন। সে জন্যই প্রশাসনিক স্তরে সমীক্ষা হচ্ছে। এই স্বচ্ছ্বতা আর কোথাও হচ্ছে না কি!”