জলের তলায় ঢালাই ফেরি-পথ। নিজস্ব চিত্র।
দেখভালের অভাবে ভাঙছে পাড়। নৌকায় ওঠার ঢালাই ফেরিপথও নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। যে টুকু জেগে রয়েছে, তার উপর দিয়েই যাতায়াত চলছে কেতুগ্রাম ২ ব্লকের শাঁখাই ফেরিঘাটে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলস্তর বেড়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নৌকায় ওঠানামার অস্থায়ী রাস্তা করা হয়েছে। তাতেও যে কোনও সময়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে মনে করছেন নিত্যযাত্রী থেকে ফেরিঘাটের কর্মীরা। মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্লার আশ্বাস, ‘‘ফেরিঘাটটি যাতে শীঘ্রই সংস্কার করা যায়, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’
করোনা রুখতে বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হতেই যাত্রী পারাপার বেড়েছে ঘাটে। নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি উঠে গেলে এক ধাক্কায় যাত্রীসংখ্যা আরও বেড়ে যাবে। কিন্তু বর্ষার ভরা নদীতে প্রাণ হাতে করে পারাপার নিয়ে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, কেতুগ্রাম ২ পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে, ভাগীরথী ও অজয় নদের সঙ্গমে রয়েছে শাঁখাই গ্রাম। তার এক প্রান্তে কাটোয়া, অন্য প্রান্তে কেতুগ্রাম। অভিযোগ, দু’পাড়েরই বেহাল দশা। অথচ এই ঘাট দিয়ে কেতুগ্রামের নানা এলাকা, মুর্শিদাবাদ যাওয়া যায়। সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলা নৌকা। প্রতিদিন আড়াই থেকে তিন হাজার মানুষ পারাপার করেন। উদ্ধারণপুরের মেলা বা পুজো, উৎসবে যাত্রীসংখ্যা বাড়ে আরও।
উদ্ধারণপুর গ্রামের বাসিন্দা মিঠুন সরকার বলেন, ‘‘নদীর দুই দিকে কংক্রিটের ফেরিপথ অনেক আগেই ভেঙেছে। আলগা মাটির উপরে বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী ফেরিপথ করা হয়েছে। কিন্তু, তা খুবই বিপজ্জনক। যাত্রীদের নৌকায় ওঠানামার সময়ে বাঁশের মাচা সরে গিয়ে বড়সড় বিপদ ঘটে যেতে পারে। প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।’’ কাটোয়ার ঘোষহাটের বাসিন্দা প্রবীর মিস্ত্রীও বলেন, ‘‘কাজের তাগিদে প্রতিদিন শাঁখাই ফেরিঘাট দিয়ে উদ্ধারণপুরে যাই। কিন্তু অস্থায়ী পথ এতটাই বিপজ্জনক যেতে ভয় লাগে।’’ ফেরিঘাটের এক কর্মীও বলেন, ‘‘ঘাটের অবস্থা দেখে প্রতি মুহুর্তে বিপদের আশঙ্কা করি। মাস তিনেক ধরে সমস্যা আরও বেড়েছে। প্রশাসনকে আগেই জানিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও কাজ হয়নি।’’
কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজের আশ্বাস, ফেরিঘাটটি দ্রুত মেরামত করা হবে। পাড় বাঁধানোর জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।