রাত হলেই বেড়ে যায় দূষণের মাত্রা, অভিযোগ অনেক দিনের। হঠাৎ হানা দিয়ে অনিয়ম মেলায় রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার দু’টি শিল্প সংস্থাকে চড়া জরিমানা করেছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। তবে তার পরেও শিল্পাঞ্চলে যে পরিস্থিতি বিশেষ পাল্টেছে, তা নয়। দূষণ প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে তাই ফের অভিযানে নামল প্রশাসন। দিন কয়েক আগে জামুড়িয়ায় চারটি কারখানা ঘুরে দেখেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।
খনি-শিল্পাঞ্চলে রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর, জামুড়িয়ার ইকড়া, কুলটির কল্যাণেশ্বরী শিল্পতালুক এলাকায় চড়়া দূষণের অভিযোগ নতুন নয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দূষণের মাত্রা রাতে বেশি হচ্ছে। কারণ, রাতে অধিকাংশ কারখানায় দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে না। অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন আশপাশের সাধারণ বাসিন্দারা।
ক্রমশ এই অভিযোগের পাহাড় জমতে থাকায় কিছু দিন আগে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোল শাখা বিশেষ অভিযানে নামে। ওই শাখার আধিকারিক সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়া শিল্পতালুকে দু’টি ছোট ইস্পাত সংস্থাকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি না মানার জন্য দশ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়।’’
কী ধরনের অনিয়ম করছিল কারখানাগুলি? সুদীপবাবু জানান, পর্ষদের বিশেষজ্ঞরা অভিযানে গিয়ে দেখেছেন, দূষণ নিরোধক যন্ত্র উপযুক্ত নিয়ম মেনে চালানো হয়নি, উৎপাদন চলার সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই যন্ত্র বন্ধ রাখা হয়েছে। কারখানার ভিতরে ও বাইরে ঠিক মতো জল ছিটনো হয়নি। কারখানার ভিতরে যতটা সবুজায়ন করার কথা, তা হয়নি।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকেরা জানান, তদন্তে জানা গিয়েছে, মহকুমার বহু শিল্প সংস্থা অনেক সময়েই দূষণ নিরোধক যন্ত্র ব্যবহার করে না। ফলে, এলাকায় শুধু যে দূষণের মাত্রা বাড়ছে তা নয়, কারখানাগুলির শ্রমিক-কর্মী ও আশপাশের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। লাগোয়া এলাকায় পুকুর বা কুয়োর জল থেকে থালার ভাত, সবেতেই ধুলোর পুরু আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে। গাছের পাতার রঙও বদলে যাচ্ছে।
এই সব বিষয়ও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে পর্ষদের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।