নজরদারি চালাবে এই ড্রোনগুলি। আসানসোলে। —নিজস্ব চিত্র।
শিল্পাঞ্চলে বায়ুদূষণের উৎপত্তিস্থল খুঁজে, পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ড্রোনের সাহায্য নিতে চলেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম’ (এনসিএপি)-এর অধীনে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন পর্ষদের আধিকারিকেরা। এটি সম্পূর্ণ ভাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে ড্রোনের পরীক্ষামূলক উড়ান হয়ে গিয়েছে। আগামী মাসের মাঝামাঝি থেকে এই কাজ শুরু হবে।
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আসানসোলের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “ড্রোনে সেন্সর ও ক্যামেরা বসানো রয়েছে। তার সাহায্যে দূষণের মাত্রা বোঝা যাবে। কে, কী ভাবে দূষণ ছড়াচ্ছেন, তারও ছবি তুলবে ড্রোন। ফলে, কেউ চাইলেও, নিজেদের আড়াল করতে পারবে না।” তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকাকে দূষণপ্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁরা বা যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ খোলা জায়গায় অবৈধ দাহ্যপদার্থ পোড়ানোয় দূষণ সৃষ্টি করেন, তাঁরা কোনও ভাবে যেন ড্রোনের উড়ানসূচি জানতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে এর পরিচালনার দায়িত্ব পুরোপুরি পর্ষদের আধিকারিকদের হাতে দেওয়া হয়েছে। কমিশনারেটের পুলিশকেও একটি ড্রোন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ, দূষণ রোধে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের উপরে অনেকটাই নির্ভর করতে হবে পর্ষদকে।
প্রশ্ন উঠেছে বায়ু দূষণ রোধে ড্রোনের ব্যবহার কেন? সুদীপ জানান, শিল্পতালুকগুলিতে দেখা গিয়েছে, কিছু শিল্পসংস্থা রাতে দূষণ নিরোধক যন্ত্রের ব্যবহার করছে না।
আবার বহু এলাকায় অযথা খোলা আকাশের নীচে অবৈধ দাহ্যপদার্থ পোড়ানোর প্রবণতা রয়েছে। যেমন শীতকালে খড়কুটো এক জায়গায় জড়ো করে আগুন ধরানো হয়। কাঁচা কয়লা ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে খোলা জায়গায় পোড়ানো হয়। গ্রামাঞ্চলে ধানখেতে পালুই জ্বালানোর প্রবণতাও রয়েছে।
কিন্তু যাঁরা এ সব করছেন, তাঁদের ঠিক মতো চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না বলে, ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ড্রোনের সাহায্যে এ সব রোখা যাবে বলে মনে করছেন সুদীপ।
সম্প্রতি আসানসোল পুরসভা এলাকায় পুর কর্তৃপক্ষ বিশেষ পর্যবেক্ষণ চালিয়েছিলেন। দেখা গিয়েছে, ২৩টি ওয়ার্ডে বায়ু দূষণের মাত্রা বেশি। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “এই ওয়ার্ডগুলির দূষণ নিয়ন্ত্রণের উপায় কী হবে, পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেক করা হবে।”