বড়শুলে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাম-তৃণমূলের, জখম পুলিশ
WB panchayat Election 2023

‘বাধা’ পেতেই হাতে বাঁশ, লাঠি

এসডিও (বর্ধমান উত্তর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ধমান ২ ব্লক দফতর ভবনের আগে একটি ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শক্তিগড় শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৩ ০৮:৩৪
Share:

আহত পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র

১৪৪ ধারা চলছে। যান নিয়ন্ত্রণ, বড়শুল আন্ডারপাস থেকে পুলিশের পাহারাও রয়েছে। তার মাঝেই সোমবার দুপুরে মনোনয়ন দিতে আসা সিপিএম প্রার্থী, কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধল তৃণমূলের। পুলিশ দু’পক্ষকে দু’দিকে সরিয়ে দেয়। তার পরেও দফায় দফায় ইটবৃষ্টি, মোটরবাইক ভাঙচুর চলে। ইটের ঘায়ে তিন পুলিশকর্মী জখমও হন। তৃণমূলের বিধায়কের দাবি, কর্মীদের আটকানো যায়নি।

Advertisement

এসডিও (বর্ধমান উত্তর) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, ‘‘বর্ধমান ২ ব্লক দফতর ভবনের আগে একটি ঘটনা ঘটেছে। সবাই যাতে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’ এ দিন অবশ্য গোলমালের পরে সিপিএম আর মনোনয়ন দিতে পারেনি। তাঁদের দাবি, তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু পুলিশ মনোনয়ন জমা করতে ‘নিষেধ’ করে এবং বড়শুল থেকে চলে যেতে বলে। সেখান থেকে গিয়ে পালসিট স্টেশনের কাছে প্রায় আধ ঘণ্টা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করেন সিপিএম কর্মীরা। জেলা পুলিশের দাবি, আজ, মঙ্গলবার নিরাপত্তার মধ্যে সিপিএম প্রার্থীদের মনোনয়ন জমার ব্যবস্থা করা হবে।

এ দিন সকাল থেকেই থমথমে ছিল বড়শুল। বেলা ১২টা নাগাদ দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে ছোট মালবাহী ট্রাকে বড়শুলের সংযোগকারী রাস্তা ধরে বর্ধমান ২ ব্লক অফিসের দিকে এগোচ্ছিল সিপিএম। বড়শুল মোড়ের কিছুটা আগে একটি গ্যারাজের সামনে দাঁড়িয়েছিল তৃণমূলের ৩০-৪০ জন। সিপিএমের অভিযোগ, ওই চত্বরে যেতেই তৃণমূলের কয়েকজন গাড়িটা আটকায়। বচসা, লাঠালাঠি বাধে। পুলিশ এসে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।

Advertisement

তখনকার মতো সংযোগকারী রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে যায় সিপিএম। বড়শুল মোড়ের দিকে চলে যায় তৃণমূল। অভিযোগ, সেই সময়ে গ্যারাজে থাকা তৃণমূল কর্মীদের মোটরবাইকগুলি ভাঙচুর করা হয়। উত্তেজনা বাড়তেই শুরু হয় দু’তরফের ইটবৃষ্টি। তিন পুলিশকর্মী জখম হন। পুলিশ সরিয়ে দেয় দু’পক্ষকে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছু ক্ষণ পরিস্থিতি শান্তই ছিল। কিন্তু খেতজমি দিয়ে সিপিএমের কয়েক জন ব্লক অফিসের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তৃণমূল হামলা করে বলে অভিযোগ। সিপিএমও লাঠি নিয়ে পাল্টা তাড়া করে। ফের বাইক ভাঙচুর করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) কল্যাণ সিংহ রায়, এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের একাংশের দাবি, তৃণমূলকে সরতে বলা হলে তাঁরা উল্টে হুমকি দেয়। পুলিশ লাঠি তাড়া করে তৃণমূলকে সরিয়ে দেয়।

তৃণমূলের বর্ধমান ২ ব্লক সভাপতি পরমেশ্বর কোনারের যদিও দাবি, ‘‘আমাদের লোকেরা বিশেষ কাজে ব্লকে যাচ্ছিলেন। তাঁদের উপরে পাথর ছোড়া হয়েছে। প্রায় ২০টি মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। চার জনের মাথা ফেটেছে। আমাদের কর্মীদের উপরে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে।’’ সিপিএমের বর্ধমান ২ এরিয়া কমিটির সদস্য কল্যাণ হাজরার পাল্টা অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের আক্রমণে আমাদের অন্তত ৫০ জনের রক্তপাত হয়েছে। তৃণমূলের আক্রমণের প্রতিরোধ হয়েছে।’’ ওই এরিয়া কমিটির সম্পাদক জহর দত্তের দাবি, ‘‘পুলিশ ব্যারিকেড না করলে তৃণমূলকে হটিয়ে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের ছিল। পুলিশের অনুরোধে মঙ্গলবার মনোনয়ন দেব।’’

তৃণমূলের বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, ‘‘আমরা এ রকম চাইনি। কর্মীদের আটকাতে পারিনি। এটা আমাদের দুর্বলতা। বৈঠক করে ফের দলের নির্দেশ জানিয়ে দিয়েছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement