হুগলি থেকে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
দোল উৎসবের সময় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার একাধিক জায়গা থেকে বেশ কয়েক জন মহিলার গলার সোনার হার কেপমারি হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। কেপমারির অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে কাটোয়া থানার পুলিশ। এর পর সোমবার হুগলি থেকে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের সোমবারই আদালতে হাজির করানো হলে তাঁদের আট দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দম্পতির নাম রঞ্জিত হালদার ও অন্নপূর্ণা হালদার। ধৃতদের বাড়ি থেকে তল্লাশি চালিয়ে নগদে ৮৯ হাজার টাকা ও ২০০ গ্রাম সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি, ওই বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে একটি এসইউভি। ওই গাড়িতে চড়েই কাটোয়া এলাকায় ঘুরে গত সপ্তাহে কয়েক দিনের ব্যবধানে পর পর সাত জনের সোনার হার কেপমারি করেছিলেন ওই দম্পতি ও তাঁদের সঙ্গীরা। পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৫ মার্চ কাটোয়ার বিষ্ণুপুর গ্রামে একটি মন্দির চত্বরে ভিড়ের মধ্যে দু’জন মহিলার গলার সোনার হার কেপমারির ঘটনা ঘটে। তার দু’দিন পরেই কাটোয়া শহরের গৌরাঙ্গবাড়ি মন্দিরে তিন জন মহিলার গলা থেকে সোনার হার চুরি যায়। আবার তার দু’দিন পর কাটোয়ার জগদানন্দপুর গ্রামে মন্দিরে পুজোর সময় দুই মহিলা পুন্যার্থীর গলা থেকে সোনার হার চুরি যায়। ওই সাত জনের গয়না মিলে প্রায় ১১ ভরি সোনা একই কায়দায় কেপমারি করা হয় বলে খবর। এই ঘটনার পর, গত শনিবার জগদানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নীলিমা চট্টোপাধ্যায় কাটোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই দিনই মঞ্জু সরকার নামে আতুহাটের বাসিন্দাও তাঁর গলার হার কেপমারি হয়েছে বলে অভিযোগ জানান।
অভিযোগ পেয়ে প্রথমে কাটোয়ার গৌরাঙ্গবাড়ি আশ্রমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে পুলিশ। সেখানে এক মহিলা ও তাঁর পুরুষ সঙ্গী আচরণ সন্দেহজনক লাগে তাদের। এর পর, পুলিশ গৌরাঙ্গবাড়ির সামনে ও আশপাশের রাস্তার ধারে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখে। ওই সন্দেহজনক দু’জনের গতিবিধিও লক্ষ্য করে তারা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখে যায়, কাটোয়ার লেলিন সরণীর উপর একটি চার চাকার গাড়িতে ওঠেন ওই দম্পতি। তাঁদের সঙ্গে আরও তিন জন মহিলাকে ওই গাড়িতে চাপতে দেখা যায়। পুলিশ ওই গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখে গাড়িটির খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করে। দেখা যায়, গাড়িটির মালিক হুগলির পোলবা এলাকার বাসিন্দা। পোলবা থানার পুলিশের সহযোগিতায় কাটোয়া থানার পুলিশ ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে। আটক করে তাঁদের গাড়িটিও। পুলিশ ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে এই চক্রে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না।