কারখানা পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র।
মদ কারখানা থেকে আসা তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে, এই অভিযোগ সম্প্রতি কাঁকসা ব্লক প্রশাসনে করেছিলেন পানাগড় শিল্পতালুকের পাশে ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ। বুধবার কারখানা ও এলাকা পরিদর্শনে আসেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অধিকারিক চিরঞ্জিৎ দাঁ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকেরা। চিরঞ্জিৎ বলেন, ‘‘স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে পরিদর্শন হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জায়গায় রিপোর্ট পাঠিয়ে দেব।’’ কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে সংস্থার ‘ইউনিট হেড’ নবদীপ থাপড়ের দাবি, ‘‘পরিদর্শন শেষে আধিকারিকেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’’
স্থানীয়দের অভিযোগ, কয়েক মাস ধরে ওই কারখানা থেকে ঝাঁঝালো দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। কাঁকসার ডাক বাংলো, মনোজপল্লি, সুভাষপল্লি, দার্জিলিং মোড়, পানাগড় বাজার এলাকার বাসিন্দারা দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন। এলাকায় স্কুল, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিভিন্ন সরকারি কার্যালয় রয়েছে। কয়েক দিন আগে স্থানীয়েরা ব্লক প্রশাসনে অভিযোগ করেন।
কারখানা পরিদর্শন করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিক ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন। তাঁরা ওই আধিকারিককে জানান, দুর্গন্ধ এতই তীব্র যে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশুরা খাবার পর্যন্ত খেতে পারছে না। অনেক সময়ে বমি করছে। এলাকার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া সুমিত কিস্কু বলে, ‘‘প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বেরোয়। বমি আসে। মিড-ডে মিলের খাবার খাওয়া যায় না।’’ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিকাশ মেটে বলেন, ‘‘কারখানার পাঁচিলের ধারেই স্কুল। আমরাও দুর্গন্ধে থাকতে পারি না। পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’’ লক্ষ্মী হাঁসদা নামে এক গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘‘কারখানার দূষিত জলে চাষের জমি নষ্ট হচ্ছে। ফসল ফলছে না। অবিলম্বে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’’
সরকারি প্রতিনিধিদের সঙ্গে এলাকায় ঘুরেছেন বিজেপি নেতা রমন শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধি পরিদর্শনে এসেছিলেন। এর পরেও পরিস্থিতি না বদলালে পরিবেশ আদালতে অভিযোগ করব।’’ তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি নবকুমার সামন্ত বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার কারখানা তৈরি করে এলাকার উন্নতি ঘটাতে চাইছে। কোনও কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’