প্রকল্পের উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্র সরকারের ‘আম্রুত’ (অটল মিশন ফর রেজুভেনেশন আরবান ট্রান্সফর্মেশন) প্রকল্প থেকে দামোদর নদের বালিতে সঞ্চিত জলকে আটকে তা বর্ধমান শহরের বাড়িতে-বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল পুরসভার। সাত বছর ধরে প্রকল্পের কাজ চলার পরে, ওই প্রকল্পের পাইপ লাইন বাড়িতে পৌঁছল। তবে বালিতে সঞ্চিত জল নয়, ভূগর্ভস্থ জলই সরবরাহ করা হবে জানিয়েছে বর্ধমান পুরসভা।
সোমবার সকালে বর্ধমান শহরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের জিলাপিবাগান এলাকায় একটি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়া হয়। পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর কর্তারা থেকে কর্মীরাও হাজির ছিলেন। উপ-প্রশাসক আইনুল হক বলেন, ‘‘ইদিলপুর থেকে দামোদরে জল আনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে পর্যাপ্ত বালির অভাব রয়েছে। সেই কারণে আরও ১০ কিলোমিটার দূরে জুজুটিতে প্রকল্প নিয়ে যেতে হয়েছে। এর জন্য বাড়তি ৫৫ কোটি টাকা খরচ হবে। ওই কাজ কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ওই প্রকল্পে ১০টি উচ্চ জলাধার নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সরাসরি ক্লোরিনযুক্ত জল সরবরাহ করা হবে। পুর-প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহর জুড়ে পাইপ লাইন বসে গিয়েছে। উচ্চ জলাধারে পাম্প বসে গিয়েছে। জলের চাহিদার কথা মাথায় রেখেই সরবরাহ শুরু করা হল। জলের অপচয় রুখতেও বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’’
কিন্তু দু’বছর আগে যে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা যাওয়ার কথা, তাতে দেরি কেন? বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা যায়, পরিকল্পনা নেওয়ার সময়ে বর্ধমান লাগোয়া ইদিলপুর থেকে দামোদরের জল তুলে তা পানীয় জলের উপযোগী করে সরবরাহ করার কথা ভাবা গিয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ারেরা সরেজমিন পরিদর্শন ও ডিভিসির সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন, বছরে অন্তত চার মাস দামোদরে জল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আরও দু’মাস পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাবে না। সে কারণে পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়। তত দিনে প্রকল্প অনুমোদন হয়ে দফায় দফায় টাকা চলে এসেছে। পাইপও তিনকোনিয়ার মাঠে জড়ো হয়ে পড়ে রয়েছে। তখন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ববিদরা এসে দামোদরের বড় অংশ সরেজমিন পরীক্ষা করে জানান, ইদিলপুর থেকে ১০ কিমি উপরে গলসির জুজুটি থেকে সারা বছর জল পাওয়া যেতে পারে। তবে স্থানীয় ভাবে সমস্যা দেখা দেওয়ায় শহরের একটা অংশে এখনও পাইপ লাইন পাতা যায়নি।
আইনুল জানান, সব জট কাটানোর কাজ চলছে।