বন্ধ দোকানপাট। শুনশান এলাকা। নিজস্ব চিত্র।
গত ৫ ডিসেম্বর রাজনৈতিক অশান্তিতে তেতে উঠেছিল বারাবনির ৪ নম্বর খরাবর এলাকা। সেখানে বৃহস্পতিবার বিজেপি মিছিল করেছে। আজ, শুক্রবার পাল্টা মিছিল করার কথা তৃণমূলও। এই পরিস্থিতিতে সে দিন যে জনতার গায়ে অশান্তির আঁচ পড়েছিল, তাঁদের আর্জি, আর কোনও অশান্তি নয়। পাশাপাশি, তাঁরা জানান, যে কোনও মুহূর্তে ফের বিপদের আশঙ্কাও করছেন।
গত ৫ তারিখ বিজেপির মিছিলকে কেন্দ্র করে অশান্তি বাধে। তৃণমূল-বিজেপি দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছিল। এ দিনও মিছিল চলাকালীন দেখা গেল, এলাকা শুনশান। ঝাঁপ বন্ধ দোকানপাটের। গত ৫ ডিসেম্বর বোমা-গুলির শব্দে ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় একটি মন্দিরে জড়ো হওয়া ভক্তেরা। এক ভক্তের মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছিল। এ দিন ওই মন্দিরের পুরোহিত প্রকাশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অশান্তির আশঙ্কায় ভক্তদের বৃহস্পতিবার মন্দিরে আসতে নিষেধ করেছিলাম।’’ মন্দিরের কাছেই ছড়িয়ে থাকা সে দিনের বোমাবাজিতে পুড়ে যাওয়া মোটরবাইকের ধ্বংসাবশেষ দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘জানি না, কবে অশান্তি থামবে! খুবই ভয়ে আছি।’’
এ দিন, এলাকায় কয়েকজন রাস্তার প্রায় মাঝে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন বিজেপির কয়েকজন নেতা, কর্মী। তাঁদের পুলিশ জামগ্রামের সভাস্থলে যেতে বললে বচসা বাধে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তের মধ্যে জনশূন্য হয়ে যায় এলাকা। অন্য দিন এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর কয়লাবোঝাই ডাম্পার ও যাত্রিবাহী অটো, ট্রেকার চলে। এ দিন সে সব কিছুইনজরে পড়েনি।
পাশাপাশি, গত ৫ ডিসেম্বর দুষ্কৃতীদের ছোড়া একটি বোমা এসে পড়েছিল উজ্জ্বল ভাণ্ডারির চা, তেলেভাজা, মিষ্টির দোকানে। বোমাটি ফাটেনি। কিন্তু দোকানের সামনে থাকা কয়েকজন ক্রেতার মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার উজ্জ্বলবাবু দোকানই খোলেননি। চাননি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতেও। তবে তাঁর স্ত্রী সবিতাদেবী বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষ। অশান্তি হলে, আমাদের রুটি-রুজিতে, আমাদের গায়েই আঁচ পড়ে। আর যেন অশান্তি না হয়।’’ এ দিন বিজেপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। তা দেখে স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় খনিকর্মী নয়ন কিস্কু বলেন, ‘‘৫ ডিসেম্বর এত পুলিশ থাকলে, হয়তো অত অশান্তি আমাদের দেখতে হত না।’’