দুর্ঘটনায় হুঁশ নেই, দেদার স্নান ব্যারাজে

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাজের কোথায় স্নান করা বিপজ্জনক, তা বোঝাতে সেই জায়গাগুলিতে নামতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বোর্ড লাগানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৫৩
Share:

দুর্ঘটনা ঘটেছে দিন তিনেক আগেই। তবু বুধবার ব্যারাজে স্নানে নামতে দেখা গেল অনেককে। নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনা ঘটলে টনক নড়ে। কিন্তু তা বেশি সময়ের জন্য নয়। দুর্গাপুর ব্যারাজে দামোদরে সেই রকমই পরিস্থিতি বলে মনে করেন এলাকাবাসীর অনেকে। নিষেধ না মেনে স্নান করতে নেমে মাঝে-মধ্যেই তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে ব্যারাজে। রবিবারও তলিয়ে যান দুই তরুণ। সোমবার তাঁদের দেহ মেলে। তার পরে মঙ্গল ও বুধবার, দু’দিনই ব্যারাজে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বিপজ্জনক জায়গায় নেমে স্নান করছেন অনেকে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যারাজের কোথায় স্নান করা বিপজ্জনক, তা বোঝাতে সেই জায়গাগুলিতে নামতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বোর্ড লাগানো হয়েছে। পিকনিকের মরসুমে মাইক নিয়ে প্রচার করা হয়। মাঝে-মধ্যে অভিযান হয়। তা সত্ত্বেও সেই সব জায়গায় স্নান করার রেওয়াজ বন্ধ করা যাচ্ছে না। রবিবার সকালে দুর্গাপুরে ভাড়া থাকা খড়্গপুরের দুই তরুণ ব্যারাজের নীচের দিকে লকগেট থেকে কিছুটা দূরে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান। সোমবার দু’দফায় লকগেটের কাছাকাছি জায়গায় দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বছরভর লকগেটের নীচে কমবয়সীদের তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। কিন্তু তার পরেও পুলিশের নিয়মিত নজরদারি না থাকায় সহজেই বিপদের তোয়াক্কা না করে দামোদরে নেমে স্নান বা খেলায় মেতে ওঠেন অনেকে। লকগেটের নীচে যে অংশে জল পড়ে, সেখানে বালি সরে গিয়ে অনেকটা জায়গা জুড়ে গর্ত তৈরি হয়। জলের উপর থেকে তা বোঝা যায় না। আবার সম্প্রতি ব্যারাজে সংস্কারের কাজের জেরে বালি তোলা হয়েছে। ফলে, পাড় থেকে নামার পরে ঢালু অংশ কমে গিয়েছে। হঠাৎ খালে গিয়ে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই স্নান করতে করতে সে জায়গায় পৌঁছে যান। তাতে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে।

Advertisement

স্নান করার জন্য বিশেষ কোনও জায়গা ব্যারিকেড করে নির্দিষ্ট করে দিলে বিপদের ঝুঁকি কমতে পারে বলে মনে করেন এলাকাবাসীর একাংশ। মঙ্গলবার ভাইফোঁটার দিনও ব্যারাজে বহু মানুষ স্নানে নেমেছেন। দু’দিন আগে যে জায়গায় দুই যুবক তলিয়ে যান, সেখানেও নামতে দেখা গিয়েছে অনেককে। পুলিশ জানায়, ব্যারাজের কাছাকাছি যে কোনও জায়গায় নামার উপরেই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই স্নান করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। টানা নজরদারি চালানোর মতো পরিকাঠামো নেই বলেও পুলিশের দাবি।

দুর্গাপুরের কোকআভেন ও বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার তরফে জানানো হয়, মাঝে-মাঝে অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বিপদ থেকে বাঁচার জন্য সচেতনতাই মূল চাবিকাঠি। দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, বছরের বিশেষ দিনে, যেমন মকর সংক্রান্তি বা মহালয়ার মতো দিনগুলিতে বহু মানুষ স্নান করতে নামেন দামোদরে। সেই দিনগুলিতে সচেতনতা প্রচারের কর্মসূচি নেওয়া হয়ে থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement