দুপুর ১টা। দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়। ঘনঘন জল খাচ্ছিলেন এক ট্রাফিক পুলিশ। রাস্তা প্রায় জনশূন্য।
একই হাল গোটা শিল্পাঞ্চলের রাস্তাঘাটে। তীব্র গরমে এমনই নাজেহাল হতে হচ্ছে পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দাদের।
গত কয়েক দিন ধরেই শিল্পাঞ্চলের তাপমাত্রার পারদ ঘোরাফেরা করছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। রবিবার সন্ধ্যার কালবৈশাখীতেও অবস্থার তেমন হেরফের হয়নি।এই পরিস্থিতিতে সকাল ১২টা থেকে বেনাচিতি, আসানসোল, বার্নপুর-সহ নানা বাজারে ক্রেতার দেখা প্রায় মিলছে না বলেই জানান ব্যবসায়ীরা। বেনাচিতির ব্যবসায়ী সুখেন মণ্ডল, ওম সিংহেরা বলেন, ‘‘ত্রিপলের ছাউনিতে রোদ আটকাচ্ছে না।সন্ধ্যা নামলে তবে কিছু ক্রেতা বাজারে আসছেন।’’
এই পরিস্থিতিতে সবথেকে সমস্যায় পড়েছে হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। দুর্গাপুরের বেশ কয়েক জন পড়ুয়া জানায়, এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে সকালে ক্লাস শুরু হলেও তাদের স্কুলে এখনও তা হয়নি। অভিভাবক তাপসী রায়, উৎপল সরকারদের দাবি, ‘‘দুপুরে লু বইছে। তখন ছেলেমেয়েরা ঘরের বাইরে থাকছে। ফলে তারা স্কুল থেকে বিকেলে ফিরে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।’’ গরমের ফলে স্কুলে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন শিক্ষকেরাও। তাঁরা জানান, মাঝেসাঝেই ক্লাস চলাকালীন কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছে। কাঁকসার সিলামপুর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল বলেন, ‘‘আমাদের অনেক পড়ুয়া সাইকেলে চড়ে যাতায়াত করে। কেউ কেউ হেঁটেও স্কুলে আসে। খুব সমস্যায় পড়ছে তারা।’’
শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারি দফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, প্রায়শই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। এর ফলে ভোগান্তি আরও বাড়ছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শঙ্খ সাঁতরা জানিয়েছেন, ‘‘সকালে ক্লাসের জন্য কয়েকটি স্কুল প্রস্তাব পাঠিয়েছে। নির্দিষ্ট দফতর থেকে অনুমতি মিললেই তা শুরু হবে।’’
এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের পরামর্শ, যথা সম্ভব গা ঢেকে, মাথায় ছাতা নিয়ে বাইরে বেরোতে হবে। ঘনঘন ওআরএস, নুন-চিনির জল খাওয়া দরকার। বাইরের তেল-মশলা জাতীয় খাবার একেবারে চলবে না বলে তাঁদের দাওয়াই।