কাটমানি নিয়ে বিক্ষোভ। ফাইল চিত্র
‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিতে এসেছিলেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু প্রধান না থাকায় কার্যালয়ে তালা ঝোলানোর অভিযোগ উঠল মঙ্গলকোটের নিগনে। বাধা দিতে গেলে পঞ্চায়েতের দুই কর্মীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। যদিও বিজেপির দাবি, মানুষই ক্ষোভে মারধর করেছেন। ভাতার ব্লক অফিস ও রায়না ১ ব্লকের পলাশন পঞ্চায়েতেও বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন দশেক আগেই স্মারকলিপি দেওয়ার দিন ঠিক করে বিডিও ও পুলিশকে জানানো হয়েছিল। সেই মতো সোমবার দুপুরে টাকা ফেরত চেয়ে জড়ো হন স্থানীয় বাসিন্দারা। পঞ্চায়েতে ঢুকে প্রধানকে না দেখতে পেয়ে বিজেপি কর্মীরা তালা লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় সরোজকুমার চৌধুরী ও সুব্রত দালাল নামে পঞ্চায়েতের দুই সহায়ককে। বলগোনার বাসিন্দা সরোজবাবু ও ভাতারের বাসিন্দা সুব্রতবাবু জানান, তাঁদের বার হতে বলে আচমকা পঞ্চায়েত কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। লাঠি নিয়ে এসে মারা হয় মাথায়, পিঠে, পায়ে। মাথাও ফাটে এক জনের।
তৃণমূলের অভিযোগ, প্রধান থাকবেন না জানানো সত্ত্বেও কামাল, সরগ্রাম, গীধগ্রাম থেকে প্রায় হাজার পাঁচেক লোক জড়ো করে বিজেপি। তাঁরাই মারধর করেছে। নিগনের প্রধান গীতা রজকের দাবি, ‘‘আমি পারিবারিক কাজে পঞ্চায়েতে ছিলাম না। এটা আগে থেকে বিজেপি কর্মীদের জানানো হয়েছিল। তার পরেও তাঁরা পঞ্চায়েতে হাঙ্গামা করেছেন বলে শুনছি।’’
বিজেপির দাবি, এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শিশির ঘোষের দাবি, ‘‘মঙ্গলকোট থানা ও ব্লক প্রশাসনকে জানানোর পরে এই তারিখ দেওয়া হয়েছিল। তার পরেও স্মারকলিপি নিতে কেউ থাকলেন না কেন? এতদিন কাটমানি নিয়েছেন, এখন মানুষের অভিযোগটুকুও শোনার সময় নেই ওঁদের। মানুষ ক্ষোভেই মারধর করেছেন।’’
তৃণমূল নেতা রেজাউল মুন্সি বলেন, ‘‘কারও অভিযোগ থাকলে আইনি সহায়তা নেওয়া প্রয়োজন। এ ভাবে সরকারি কাজে বাধা দিয়ে, কর্মীদের মারধর করে কি দাবি আদায় যায়?’’ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, জানান মঙ্গলকোটের বিডিও মুস্তাক আহমেদ।
ভাতারেও ‘কাটমানি’ ফেরত ও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে ধাক্কাধাক্কি হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির দাবি, সরকারি প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই ভুয়ো মাস্টার রোল তৈরি করে টাকা তোলা হয়েছে। ধান কেনা নিয়েও দুর্নীতি হয়েছে। রায়নার পলাশন পঞ্চায়েতে নলকূপ সংস্কার, রাস্তাঘাট সংস্কার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক সভা বন্ধের দাবি করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা গোলাম জার্জিস বলেন, “গোটা জেলা জুড়ে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লকে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আনা ও তদন্ত করানোই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’’ জেলার তৃণমূল যুব সভাপতি তথা ভাতারের বিধায়ক সুভাষ মণ্ডলের পাল্টা, “মানুষকে বিভ্রান্ত করে অশান্তি ছড়ানোই বিজেপির উদ্দেশ্য।’’