২৫ শিশুকে উদ্ধার করে সফল দুর্গাপুর স্টেশন

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৫-র জুলাইয়ে নিখোঁজ শিশুদের বা়ড়ি ফেরাতে ‘অপারেশন মুসকান’ শুরু হয়।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

‘অপারেশন মুসকান’-এর সৌজন্যে দুর্গাপুর স্টেশনের মুকুটে নতুন পালক। রেল পুলিশের দাবি, ২০১৭ সালে আসানসোল ডিভিশনের ৭০টি স্টেশনের মধ্যে এই স্টেশন থেকেই সব থেকে বেশি ২৫ জন নিখোঁজ শিশু ও নাবালক, নাবালিকা উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ, রেলের উদ্যোগের পাশাপাশি এই এলাকার নাগরিক সচেতনতার কারণেই সাফল্য বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৫-র জুলাইয়ে নিখোঁজ শিশুদের বা়ড়ি ফেরাতে ‘অপারেশন মুসকান’ শুরু হয়। এই উদ্যোগে দেশের সব রাজ্য থেকে পুলিশকর্তাদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানে বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, শপিং মল, বাজার প্রভৃতি এলাকায় অভিযান চলে। শিশু উদ্ধারের পরে পরিবারকে খুঁজে বের করে তাকে আত্মীয়-পরিজনের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পশ্চিম বর্ধমান জেলায় আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট ইতিমধ্যেই নিখোঁজ নাবালক উদ্ধারে বেশ কয়েকটি সাফল্য পেয়েছে। আসানসোল ডিভিশনের রেলপুলিশও এই প্রকল্পে সামিল হয়ে নিখোঁজ শিশু উদ্ধারে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, আসানসোল ডিভিশনে প্রায় ৭০টি স্টেশন রয়েছে। তার মধ্যে দুর্গাপুরের পরে সব থেকে বেশি ১৮ জন শিশুকে উদ্ধার হয়েছে জসিডি স্টেশন থেকে। এ ছাড়া জামতাড়ায় ১৬ জন এবং আসানসোল ও মধুপুরে ১৫ জন করে শিশুকে উদ্ধার করেছে রেল পুলিশ। এ ছাড়া বরাকর, রানিগঞ্জ, অন্ডাল, পানাগড়, সিউড়ি স্টেশন থেকেও নিখোঁজ শিশুদের উদ্ধার করে পরিবারের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে রেল পুলিশ। সব মিলিয়ে এই ডিভিশনে ২০১৭ সালে মোট ১২১ জন শিশু ও নাবালক কিশোর-কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মেয়ে। ২০১৬-র থেকে ৪৫ শতাংশ বেশি সংখ্যক শিশু বা বাচ্চাকে উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি রেল পুলিশের। ওই বছর রেল পুলিশ ৮৬ জন শিশু ও নাবালক বাচ্চাকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ।

Advertisement

আসানসোল ডিভিশনের রেলপুলিশের কমান্ড্যান্ট এএন ঝা জানান, সাধারণত বাবা-মায়ের বকুনি, পরীক্ষার ভয়, পরীক্ষার খারাপ ফল-সহ নানা কারণে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে অল্পবয়সীদের মধ্যে। আবার কখনও বা দেখা যায়, তারা দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়ে। রেল পুলিশের দাবি, শিশু-চুরি, পাচারের ঘটনাও সামনে এসেছে অতীতে। সাধারণত, ট্রেনে করেই তাদের ভিন্-রাজ্যে পাচার করা হয়।

রেলপুলিশ জানায়, এই পাচার রুখতে নানা ভাবে পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিশেষ ‘চাইল্ড লাইন’ হেল্প নম্বর, ১০৯৮-র মাধ্যমে পাওয়া তথ্য নিরন্তর যাচাইয়ে লেগে থাকা, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা সহ নানা পদক্ষেপ নেওয়াতেই এই সাফল্য।

কিন্তু দুর্গাপুরে এই ‘সাফল্য’ সব থেকে বেশি কেন? দুর্গাপুরে রেল পুলিশের ওসি কমলজিৎ সিংহের দাবি, এই স্টেশনে বেশির ভাগ দূরপাল্লা ও স্বল্পপাল্লার ট্রেন দাঁড়ায়। কিন্তু আসানসোলের তুলনায় এখানে ভিড় কম থাকে। তা ছাড়া নিত্যযাত্রীরাও অত্যন্ত সচেতন। সন্দেহজনক যে কোনও গতিবিধি দেখলেই তাঁরা রেল পুলিশকে খবর দেন। পাশাপাশি, রেল পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্মীরাও অত্যন্ত তৎপর।

রেল পুলিশের আশা, আগামী বছরে সাফল্যের হার আরও বাড়বে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement