বহির্বিভাগের টিকিটের জন্য অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র
জরুরি পরিষেবা তো ছিলই, বুধবার ভিড়ে ঠাসা বহির্বিভাগেও রোগী দেখলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সিনিয়র-জুনিয়র চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা পরে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার খোলা হয়। ফলে ভিড় জমে যায় রোগী ও তার পরিজনেদের। তবে বিশৃঙ্খলা হয়নি। হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “ডাক্তারবাবুরা বহির্বিভাগে আসবেন কি না, তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছিল। সে জন্যে নির্ধারিত সময়ের আ ধঘন্টা পরে বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার খোলা হয়। প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে ডাক্তারবাবুরা বহির্বিভাগে হাজির হতেই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়।’’
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন বিলের প্রতিবাদে বুধবার দেশ জুড়ে চিকিৎসা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সমস্ত পরিষেবাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ করার কথা বলা হয়। আশঙ্কায় ছিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। মঙ্গলবার বিকেল থেকে দফায় দফায় ওই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতির দকে নজর রেখেছিলেন ডেপুটি সুপার। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেও ওই সংগঠন হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালাবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। বুধবার সকালে অবশ্য সংগঠনের কর্তারা বৈঠক করে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, তাঁরা হাসপাতালে যাবেন, সমস্ত পরিষেবাও দেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বহির্বিভাগে ২৩৮৩ জন রোগী ছিলেন। বুধবার ৪০৮৪ জন বহির্বিভাগে চিকিৎসা করিয়েছেন। অনাময় হাসপাতালেও গতকালের চেয়ে বুধবার বেশি রোগী ছিল। হাসপাতালের সুপার তথা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রবীর কুমার সেনগুপ্ত বলেন, “আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলাম। বহির্বিভাগে চিকিৎসকরা না এলে কী ভাবে পরিস্থিতি সামলানো যায়, সেটাও ভেবে রাখা হয়েছিল।’’
এনআরএস-কান্ডের জেরে সম্প্রতি জুনিয়র চিকিৎসকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন বর্ধমানেও। হাসপাতালের গেট লাগিয়ে আন্দোলনের জেরে রোগীর বাড়ির লোক, বহিরাগতদের সঙ্গেও ঝামেলা বেধেছিল জুনিয়র চিকিৎসকদের। বাঁশ-লাঠি হাতে তেড়ে যেতেও দেখা যায় কয়েকজনকে। চিকিৎসা পরিষেবাও কার্যত শিকেয় উঠেছিল। ডাক্তারদের দাবিদাওয়ার সঙ্গে সহমত হলেও পরিষেবা না পেয়ে ক্ষোভও জন্মাচ্ছিল রোগীদের মধ্যে। এ দিন আইএমএ-র এক সদস্য বলেন, ‘‘আমরা বারবার আলোচনা করেছি। মনে হয়েছে, মানুষকে বিপদে ফেলে আন্দোলন করা ঠিক হবে না। এমনকি, পরিষেবা বন্ধ করে আন্দোলন করলে মানুষ হয়তো পাশে থাকবেন না সে ভয় ছিল। তাই হাসপাতালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ সংগঠনের বর্ধমানের অন্যতম কর্তা দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “সরকারি পরিষেবা বন্ধ রেখে আন্দোলনের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কালো ব্যাচ, ব্যানার-ফেস্টুন, মিছিলের মাধ্যমে এনএমসির-প্রতিবাদ জানানোর নির্দেশ ছিল।’’