টাকা কেন, প্রশ্নে মার প্রসূতিকে

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে সুপারের কাছে জানতে চান মহকুমাশাসক। সুপার রতনবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘নার্স ও চিকিৎসকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
Share:

বিতর্কে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র

মেয়ে হয়েছে না ছেলে, তখনও জানেন না প্রসূতি। অভিযোগ, সে কথা জানতে চাওয়ায় কর্তব্যরত নার্স ও আয়ারা টাকা চান প্রসূতির কাছে। টাকা কেন, প্রশ্ন করায় চুলের মুঠি ধরে প্রসূতির মাথাও ঠুকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের ঘটনা।

Advertisement

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসবযন্ত্রণা নিয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মুর্শিদাবাদের সালারের উজুনিয়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের বুল্টি খাতুনকে। তাঁর কাকা, কাটোয়ার বিদ্যাসাগরপল্লির বাসিন্দা ধানু শেখের অভিযোগ, ‘‘বুল্টিকে ‘লেবার রুমে’ ঢোকানো হয়। সেই সময়ে ও যন্ত্রণায় ছটফট করছিল। ওই অবস্থাতেও তাঁকে চড় মারেন কর্তব্যরত নার্স।’’ বৃহস্পতিবার ভোরে স্বাভাবিক প্রসব হয় বুল্টির।

মহকুমাশাসকের (কাটোয়া) কাছে লিখিত অভিযোগে বুল্টি জানিয়েছেন, প্রসব হওয়ার পরেই তিনি তাঁর সন্তান কোথায় জানতে চান। অভিযোগ, সেই সময়ে কর্তব্যরত নার্স ও আয়ারা তাঁকে বলেন, ‘আগে ৫০০ টাকা দাও।’ সে কথা শুনে বুল্টি বাইরে থাকা স্বামী ও পরিবারের লোক জনের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। অভিযোগ, তার পরেও টাকা চাওয়া হয়। ওই প্রসূতির অভিযোগ, এ ভাবে টাকা চাওয়া যায় কি না প্রশ্ন করায় তাঁর চুলের মুঠি ধরে বিছানার রডে মাথা ঠুকে দেন কর্তব্যরত নার্স ও আয়ারা। শুক্রবার ধানু অভিযোগ করেন, ‘‘কিছুক্ষণ বাদে কয়েক জন নার্স ও আয়া এসে ৫০০ টাকা চান। তা দিতে বাধ্য হই।’’ এর পরেই বুল্টির কোলে দেওয়া হয় তাঁর সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে।

Advertisement

প্রসূতির স্বামী বাইতুল্লা শেখ এই ঘটনার অভিযোগ জানিয়ে ওই নার্স ও আয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হাসপাতালের সুপার রতন শাসমল এবং মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পালের কাছে আর্জি জানান। সেই অভিযোগে স্বাক্ষর রয়েছে ওই দিনই প্রসব হওয়া আরও চার জন প্রসূতির। দুপুরের পরে বুল্টিকে বাড়ি নিয়ে যান পরিবারের লোকজন।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষয়টি নিয়ে সুপারের কাছে জানতে চান মহকুমাশাসক। সুপার রতনবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘নার্স ও চিকিৎসকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে। মারধর হয়নি। ওই মহিলার ‘লোকাল অ্যানাস্থেসিয়া’র মাধ্যমে প্রসব করানো হয়েছে। প্রসবের সময়ে যন্ত্রণার কারণে মহিলার মানসিক অবস্থা খারাপ থাকে।’’

বুল্টির অভিযোগের প্রেক্ষিতে রেখা হাজরা এবং চম্পা ডোম নামে দু’জন সাফাইকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান সুপার। তবে হাসপাতালের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রসূতির পরিবারের প্রশ্ন, অভিযোগ, নার্স ও আয়াদের বিরুদ্ধে। সেখানে সাফাইকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কেন। এ প্রশ্ন জানতে চাওয়ায় সদুত্তর দিতে না পারলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, টাকা নেওয়ার অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। তাঁদের আরও দাবি, ওই টাকা আয়া, সাফাইকর্মীদের মধ্যে ভাগ হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement