বৃষ্টির সময়ে গাড়ুইয়ে তলিয়ে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। আসানসোলে। ছবি: পাপন চৌধুরী।
আসানসোলে গাড়ুই নদী নিয়ে শনিবার ফের এক বার ‘মাস্টারপ্ল্যান’ তৈরির প্রসঙ্গ তুললেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক মলয় ঘটক। আগেও তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে দাবি করেছেন। ফের তা সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরে আনবেন বলে জানিয়েছেন মলয়। মন্ত্রীর এই কথার কোনও গুরুত্ব নেই বলে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। যদিও অগ্নিমিত্রার মন্তব্যে গুরুত্ব দেননি পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
গত ২ অগস্ট টানা প্রায় ১২ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতে ফুলেফেঁপে ওঠে গাড়ুই নদী। এর জেরে আসানসোল শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রেলপারের সাতটি ওয়ার্ড বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। কয়েকশো বাড়িতে জল ঢুকে যায়। নামানো হয় জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে। ওই রাতে কল্যাণপুর সরকারি আবাসন সেতু ও ডিপোপাড়া অঞ্চলে নদী পারাপার করার সময়ে তলিয়ে মৃত্যু হয়দু’জনের।
মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয় রাজ্য সরকার। শনিবার আসানসোল সার্কিট হাউসে দুই মৃতের পরিবারের সদস্যদের সেই ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। ছিলেন জেলাশাসক এস পুন্নমবলম। অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, “গাড়ুই-সমস্যা মেটাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান করা উচিত বলে মনে আমি করি। এটা যে যে বিভাগের অধীনে পড়ে, তাদের নজরে আনব। গত বারও এনেছিলাম। যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ বারের ঘটনা উস্কে দেয় ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের স্মৃতি। সে বার আসানসোলে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল স্থানীয় সূত্রের দাবি। এলাকার পরিস্থিতি সরেজমিন খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং জাভেদ খান। সেবারই প্রথম আসানসোলকে গাড়ুইয়ের হাত থেকে বাঁচাতে একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মন্ত্রী মলয়।
শনিবার ফের ওই মাস্টারপ্ল্যানের প্রসঙ্গ ওঠায় রাজ্য সরকারকে বিঁধেছেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি বলেন, “কোনও সমস্যা হলেই ওঁরা পুরনো কথা তুলে নতুন মোড়ক দেওয়ার চেষ্টা করেন। তৃণমূল সরকারের নেতামন্ত্রীরা ফাঁকা বুলি দিয়ে মানুষকে বোকাবানাচ্ছেন।” তাঁর অভিযোগ, “তোলাবাজি ছাড়া এই দলটা (তৃণমূল) কিছু জানে না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, নিয়মিত গাড়ুই নদী সংস্কারের কাজ করছে পুরসভা। তাঁর পাল্টা, ওঁরা নিন্দুক। তাই ওঁদের নজরে এ সবপড়ে না।