প্রতীকী ছবি।
পকসো আদালত চালুর পরে চার বছর কোনও বিশেষ সরকারি আইনজীবী (স্পেশাল পিপি) নিয়োগ করা হয়নি। ফৌজদারি আদালতের সরকারি আইনজীবীরাই (পিপি) সেই দায়িত্ব পালন করতেন। ২০১৭ সালে ‘স্পেশাল পিপি’ নিয়োগ হলেও তাঁরা পুরনো মামলার ভার পাননি। এখন ‘স্পেশাল পিপি’ ছাড়া ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের বিভিন্ন মামলার শুনানি শুনতে নারাজ বিচারক। ফলে, শতাধিক মামলার বিচার প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে রয়েছে বলে দাবি আইনজীবীদের একাংশের।
বর্ধমানের ওই বিশেষ আদালতের বিচারক সুযশা মুখোপাধ্যায় সম্প্রতি জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবকে চিঠি দিয়ে ‘স্পেশাল পিপি’ নিয়োগের কথা বলেছেন। বুধবার বর্ধমানের পকসো আদালতে কিশোরীকে ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের একটি মামলার শুনানি ছিল। সরকারি আইনজীবী মানস বন্দ্যোপাধ্যায় শুনানির জন্য এজলাসে যান। কিন্তু স্পেশাল পিপি না থাকায় বিচারক মামলা শুনতে চাননি বলে জানান আইনজীবীরা। এর পরেই রাজ্য সরকারের ‘ডিরেক্টর অব প্রসিকিউশন’কে স্পেশাল পিপি নিয়োগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’
আইনজীবীরা জানান, ২০১৩ সালে বর্ধমান আদালতে শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে পকসো আইনের মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ এজলাস গঠন হয়। আইন অনুযায়ী, পকসো আদালতের জন্য স্পেশাল পিপি নিয়োগ করা বাধ্যতামূলক। অন্য সরকারি আইনজীবী এই আদালতের শুনানিতে যোগ দিতে পারেন না। কিন্তু ২০১৭ পর্যন্ত এখানে কোনও স্পেশাল পিপি নিয়োগ করা হয়নি। তার পরে তাপস সামন্ত ও গৌতম মুখোপাধ্যায় স্পেশাল পিপি হিসাবে নিযুক্ত হন।
গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমাদের নিয়োগের আগেই এখানে ফৌজদারি আদালতের সরকারি আইনজীবীরা (এপিপি) দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। বিচারক জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী স্পেশাল পিপি ছাড়া শুনানি শুনবেন না। তিন মাস ধরে সরকারি আইনজীবী (পিপি) না থাকায় এপিপিদের কাছ থেকে পুরনো মামলার নথিগুলি ফেরানো যাচ্ছে না। ফলে, বিচার প্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে।’’ আইনজীবী হরদীপ সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘স্পেশাল পিপি না থাকায় পকসো আদালতে বিচার পেতে দেরি হচ্ছে। এই আদালতের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে।’’