বারবার দরবারই সার, বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি তিন গ্রামে

ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন বারবার। কিন্তু আঁধার ঘোচেনি। বারাবনির তিনটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি এখনও। কবে পৌঁছবে, সে ব্যাপারেও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারাও। ফলে, লণ্ঠনের আলোই ভরসা গ্রামবাসীদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৫ ০১:০৫
Share:

বিদ্যুতের খুঁটিও নেই। —নিজস্ব চিত্র।

ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের কাছে আবেদন করেছেন বারবার। কিন্তু আঁধার ঘোচেনি। বারাবনির তিনটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি এখনও। কবে পৌঁছবে, সে ব্যাপারেও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারাও। ফলে, লণ্ঠনের আলোই ভরসা গ্রামবাসীদের।

Advertisement

বারাবনির দোমহানি পঞ্চায়েতে পাশাপাশি তিনটি গ্রাম সিংহবাহিনী, লক্ষ্মণ ধাওড়া ও বুধরাইবেড়। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামগুলিতে বেশির ভাগ বাসিন্দা বিপিএল তালিকাভুক্ত। গ্রামগুলির একেবারে সামনে দিয়ে বিদ্যুতের তার গিয়েছে। সন্ধ্যায় কিলোমিটার খানেক দূরের এলাকাগুলি আলো ঝলমলে করলেও এই তিন গ্রাম আঁধারেই থাকে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও প্রশাসনে বহু বার দরবার করেও বিদ্যুৎ সংযোগ মেলেনি।

সিমেন্টের ঢালাই রাস্তা পেরিয়ে বুধরাইবেড় গ্রামে ঢুকতে মোড়ের মাথায় গল্প করছিলেন কয়েক জন বাসিন্দা। তাঁদের ক্ষোভ, এই এলাকার কথা কেউ ভাবে না। গ্রামের ৪৯টি পরিবারের প্রায় সবারই নাম রয়েছে বিপিএল তালিকায়। রাস্তা ও পানীয় জলের সমস্যা থাকলেও তাঁদের বেশি ক্ষোভ এই বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে। এলাকার বাসিন্দা বাপি মাড্ডির বক্তব্য, ‘‘ক্ষমতায় কত জনই তো এল। সবাই সমস্যার কথা জানেন, কিন্তু কেউ তার সমাধান করল না।’’

Advertisement

বুধাইবেড় থেকে বেরিয়ে উল্টো দিকের রাস্তা ধরে কিছুটা গেলে সিংহবাহিনী গ্রাম। প্রায় ৩৬টি পরিবারের বাস সেখানে। বাসিন্দারা জানান, এখানে বিদ্যুৎ না থাকায় খুবই অসুবিধা। গ্রামে বেশ কয়েক জন ছেলেমেয়ে রয়েছে যারা স্কুলে যায়। গ্রামের বাসিন্দা পরেশ মাড্ডির কথায়, ‘‘কেরোসিনের আলোই ভরসা। কিন্তু কেরোসিনের দামও বেড়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়াও যায় না।’’ পাশের গ্রাম লক্ষ্মণ ধাওড়ায় ৩০টি পরিবারের বাস। বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে ক্ষুব্ধ তারাও। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বার ভোটের আগে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গ্রামে এসে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু, ভোট মেটার পর কিছু মেলে না।

পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ বাবলু হাঁসদা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ না থাকায় সমস্যার কথা পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের ও ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বুধন বাউরির বক্তব্য, ‘‘কিছু কারিগরি সমস্যা রয়েছে। ওই এলাকায় বিদ্যুৎ দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চলছে।’’ বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাও চলছে বলে তাঁক দাবি।

তবে কারিগরি সমস্যাটি কী, তা নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। সংস্থার এক কর্তার অবশ্য দাবি, বিপিএল অধ্যুষিত ওই গ্রামে বিদ্যুদয়নের খরচ কারা বহন করবে, সে প্রশ্নেই বিষয়টি থমকে রয়েছে। বারাবনির বিডিও উজ্জ্বল বিশ্বাসের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘উচ্চ পর্যায়ে কথাবার্তা চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement