Raiganj

মানা ‘হল না’ বিধি

দূরত্ব-বিধি সে ভাবে মানতে দেখা যায়নি উপস্থিত জনতাকে। ১ ও ২ নম্বর গেটে নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র নিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সভা শুরু হওয়ার পরে দেখা যায়, অনুমতিপত্র ছাড়া ভিতরে ঢুকতে চাওয়া লোকজনকে সামলাতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:৫৯
Share:

রানিগঞ্জের সভায়। নিজস্ব চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা-কালে মাস্কের উপযোগিতা মনে করিয়ে দিলেন। তবে মঙ্গলবার রানিগঞ্জের সিহারসোল রাজবাড়ি মাঠে তাঁর প্রশাসনিক জনসভায় অনেককে মাস্ক ছাড়াই দেখা গেল। দূরত্ব-বিধি রক্ষিত হচ্ছে না এমন দৃশ্যও চোখে পড়ল। তবে প্রশাসন ও তৃণমূল সূত্রের দাবি, যথাসম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে।

Advertisement

দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের সংরক্ষিত বাসে জেকে নগর থেকে সভায় এসেছিলেন মাখনলাল পাসোয়ান। মাস্ক পরেননি। কেন? তাঁর জবাব, ‘‘তাড়াহুড়োয় ভুলে গিয়েছি।’’ মাখনলালবাবুর মতোই এগারা, তিরাট, পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া, অণ্ডাল-সহ জেলার নানা প্রান্ত থেকে সভায় আসা অনেকেই মাস্ক পরেননি। তবে বাসে ঠাসা ভিড় ছিল। তবে রূপনারায়ণপুরের ডাবর মোড় থেকে আসা বৃদ্ধা কমলা ঘোষ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাপি চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘করোনা-পরিস্থিতিতে আমাদের স্বাস্থ্য-বিধি মানতেই হবে।’’ তাঁদের মতো অনেকে মাস্ক পরেও ছিলেন।

কিন্তু দূরত্ব-বিধি সে ভাবে মানতে দেখা যায়নি উপস্থিত জনতাকে। ১ ও ২ নম্বর গেটে নির্দিষ্ট অনুমতিপত্র নিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সভা শুরু হওয়ার পরে দেখা যায়, অনুমতিপত্র ছাড়া ভিতরে ঢুকতে চাওয়া লোকজনকে সামলাতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। ২ নম্বর গেটে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হচ্ছিল। ভিড়ের চাপে তা সবাইকে দেওয়া যায়নি বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মী। পাশাপাশি, ৩ ও ৪ নম্বর গেটেও ঢোকেন প্রচুর মানুষ। সেখানেও দূরত্ব-বিধি রক্ষিত হয়নি। সেই সঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারদের খাবারের প্যাকেট দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে লাইনে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে প্যাকেট নিতে দেখা গেল। মুখ্যমন্ত্রী হেলিকপ্টারে উড়ে যাওয়ার সময়ে ১ নম্বর গেটে অনেককেই চপার ছবি মোবাইলের ফ্রেমে বন্দি করার জন্য হুড়োহুড়ি করতে দেখা যায়।

Advertisement

এ দিকে, ভিড় হওয়ায় ব্যবসা খুবই ভাল হয়েছে বলে জানান পুরি-সব্জি বিক্রেতা সঞ্জয় সাউ। তিনি বলেন, ‘‘এত ভাল ব্যবসা অনেক দিন হয়নি।’’ পাশাপাশি, তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম সম্পাদক ভি শিবদাসন দাবি করেন, ‘‘সভায় ৪০-৫০ হাজার লোক হয়েছিল। যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মানাও হয়েছে।’’

তবে করোনা-সতর্কতার কথা শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। সভার একেবারে শেষ পর্বে বলেন, ‘‘মাস্ক ব্যবহার করবেন। মাস্ক পরাটা খুবই জরুরি।’’ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) আসানসোল শাখার সভাপতি শ্যামল সান্যালের তবে আক্ষেপ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ভিড় হবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁর সামনেই যে ভাবে জনতার অনেকেই মাস্ক না পরে, দূরত্ববিধি না মেনে সভায় যোগ দিলেন, সেটা করোনা-আবহে অবশ্যই চিন্তার। এ জন্য প্রাথমিক ভাবে সব থেকে জরুরি, জন-সচেতনতা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement