চলছে সুইমিং পুল তৈরির কাজ। আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র
জেলা সফরে এসে শিলান্যাস পর্ব সেরেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরেই আসানসোলে জাতীয় স্তরের একটি সুইমিং পুল তৈরির কাজে গতি এসেছে। আসানসোল পুর-কর্তৃপক্ষকে এটির নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
আসানসোল পুরসভার নজরদারিতে ২০০৭ সালে স্টেডিয়াম লাগোয়া এলাকায় একটি সুইমিং পুল তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি তেমন উন্নত মানের না হওয়ায় ২০১৬ সালে আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষ ওই পুলটি সংস্কার করেন। কিন্তু তার পরেও সেটিকে জাতীয় পর্যায়ে উন্নীত করা যায়নি। ফলে, এখানে প্রশিক্ষণ চললেও কোনও রকম সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে শহরে একটি জাতীয় স্তরের নতুন পুল তৈরির দাবি তোলেন শহরবাসী। দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য সরকারের কাছে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট জমা করে অনুমোদন চান আসানসোল পুর-কর্তৃপক্ষ। গত ৮ ডিসেম্বর সেই পুলেরই শিলান্যাস করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আসানসোল স্টেডিয়াম লাগোয়া বর্তমান পুলটির পাশেই তৈরি হচ্ছে নতুনটি। পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে, এই পুল তৈরির প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় এক কোটি ২২ লক্ষ টাকা। পুরসভার সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার সুকোমল মণ্ডল জানিয়েছেন, জাতীয় স্তরের এই পুলের নকশা ও পরিকাঠামো নিয়ম মেনেই তৈরি হচ্ছে।
৫০ মিটার লম্বা ও ২৫ মিটার চওড়া পুলটির এক দিকের গভীরতা চার মিটার, অন্য দিকের গভীরতা প্রায় দেড় মিটার। আসানসোলের পুর কমিশনার নীতীন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ‘‘আমি নিজে কয়েকবার এটির নির্মাণের কাজ তদারকি করেছি। মার্চ মাসের মধ্যে এটি শেষ করে চালু করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।’’
কী ভাবে এটি পরিচালনা করা হবে? সুকোমলবাবু জানিয়েছেন, যাঁরা এই পুলে প্রশিক্ষণ নিতে চান, তাঁদের নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে, তাঁকে অনুমতিপত্র ও সচিত্র পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। একাধিক দলে ভাগ করে, প্রত্যেকটি দলকে ৪৫ মিনিট ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে পাঁচ জন পুরুষ ও চার জন মহিলা প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এর আগে প্রশিক্ষক চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। জাতীয় স্তরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করে প্রশিক্ষক নিয়োগ করা হবে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে প্রশিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে। পুলের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে যাবতীয় আয়, ব্যয়ের দায়িত্ব আসানসোল পুরসভার। এটি চালু হওয়ার পরে, পুরনো পুলটি শুধু শিশুদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হবে।
শহরে জাতীয় স্তরের এমন একটি পুল তৈরির খবরে খুশি শিল্পাঞ্চলবাসী। পুরনো পুলে প্রশিক্ষণ নিতে আসা অনন্যা দে, ঋষভ মল্লিকেরা জানাল, নতুন পুলটি তৈরি হয়ে গেলে, জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার আগে ভাল ভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারা যাবে বলে আশাবাদী তারা।