দলবদলের বার্তা নিয়ে চাপানউতোর

রবিবার রানিগঞ্জের রেল মাঠে আয়োজিত বিজেপি-র সভায় যোগ দিয়ে মুকুলবাবু বলেন, ‘‘মন্ত্রী মলয় ঘটক তাঁর ভাই অভিজিৎকে নিয়ে কোনও কাজ করতে পারছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রানিগঞ্জ ও আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩০
Share:

সভা: রবিবার রানিগঞ্জে মঞ্চে বিজেপি নেতৃত্ব। নিজস্ব চিত্র

দলবদলের পরে কখনও তাঁকে দেখা গিয়েছে, শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দলকে কাজে লাগানোর বার্তা দিতে। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক-সহ শাসকদলের চার বিধায়ক ও এক কাউন্সিলরের জন্য বিজেপি-র দরজা খোলা, এমনই বার্তা দিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। যদিও এমন ‘বার্তা’র পরে তৃণমূলকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন মলয়বাবু-সহ ওই চার নেতা।

Advertisement

রবিবার রানিগঞ্জের রেল মাঠে আয়োজিত বিজেপি-র সভায় যোগ দিয়ে মুকুলবাবু বলেন, ‘‘মন্ত্রী মলয় ঘটক তাঁর ভাই অভিজিৎকে নিয়ে কোনও কাজ করতে পারছেন না। তাঁর কোনও কথা মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি শুনছেন না। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় হাঁসফাঁস করছেন। একই হাল উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়েরও। বিধান উপাধ্যায়ও বুঝতে পারছেন, কী ভাবে দলে কোণঠাসা হয়ে যেতে হচ্ছে। মলয়বাবু-সহ এঁদের বলতে চাই, ঠিক সময়ে দল ছেড়ে বেরিয়ে এসে বিজেপি-তে যোগ দিন।’’

কিন্তু মুকুলবাবুর এমন মন্তব্যের কারণ কী? তৃণমূলের কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, আদতে উনি দল ভাঙানোর চেষ্টা করছেন। তা করতে গিয়ে আসলে দলের গোষ্ঠীকোন্দলের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন মুকুলবাবু। রাজনৈতিক মহলের দাবি, এ সবই আগামী পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়েই। কিছু দিন আগেই পূর্ব বর্ধমানে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের পঞ্চায়েতে ভাল ফল করার জন্য শাসক দলের নেতা-কর্মীদের কোন্দলকে কাজে লাগানোর কথা বলেছিলেন। তা ছাড়া রাজ্যে বিজেপি-র দু’টি লোকসভা আসনের একটি আসানসোল। কিন্তু গত বিধানসভা ভোটে বিজেপি এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত একটি আসনেও জিততে পারেনি। যদিও দু’টি আসনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। তাকেই ‘সাফল্য’ ধরে এই সময় নতুন জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে সংগঠনকে মজবুত করতেই এমন মন্তব্য বলে মনে করছে এলাকার রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

যদিও মুকুলবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তৃণমূল। রবিবার সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ আসানসোলে তৃণমূলের জেলা দফতরে তিন বিধায়ক এবং জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনকে পাশে বসিয়ে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘কাঁচড়াপাড়ার বাবু যেটাই বলুন না কেন, আমাদের হাসি পাচ্ছে। ওঁর কথা শুনলে মিরজাফরের চোখেও জল আসবে। পশ্চিম বর্ধমানে আমরা যাঁরা তৃণমূলের বিধায়ক, নেতা-কর্মী রয়েছি, তাঁরা খুব ভাল আছি। আমাদের কথা ভাবতে হবে না, উনি নিজের কথা ভাবুন। দু’দিন পরে বিজেপি থেকে মুকুল এমনিই ঝরে যাবে।’’

রানিগঞ্জের ওই সভায় মুকুলবাবু ছাড়াও বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ, দিলীপ ঘোষ, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখেরা যোগ দিয়েছিলেন। প্রত্যেকেই রাজ্যের শিল্পনীতি, এলাকায় অবৈধ কয়লার কারবার প্রভৃতি নিয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগ করা হয় শাসক দলের সন্ত্রাসেরও। যদও তৃণমূল যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

বিজেপি-র দাবি, ওই সভায় কুড়ি হাজার কর্মী, সমর্থক যোগ দিয়েছিলেন। যদিও পুলিশের দাবি, সংখ্যাটা সাড়ে তিন থেকে চার হাজার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement