প্রতীকী ছবি।
রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার এবং মোবাইল নম্বর সংযুক্ত করার কাজ শুরু হল পূর্ব বর্ধমানে। প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রতিটি ব্লক, খাদ্য পরিদর্শক, রেশন দোকানে এই নির্দেশ পৌঁছেছে। কাজও শুরু হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতর সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারির মধ্যে সব উপভোক্তার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার ও মোবাইল নম্বর যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, ‘‘রেশন দোকানে ই-পিওএস যন্ত্রে বা খাদ্য দফতরের পোর্টালে গিয়ে ফর্ম পূরণ করেও উপভোক্তারা রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার ও মোবাইল নম্বর সংযোগ করতে পারবেন।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে ৫৩ লক্ষ রেশনের উপভোক্তা রয়েছেন। লকডাউনের আগে ২৯ লক্ষ উপভোক্তার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন বিলি করা নিয়ে কিছু সংশয় তৈরি হয়। লকডাউন পর্বে রেশন বিলি নিয়ে অনিয়মের অভিযোগও ওঠে। পরে ডিজিটাল কার্ডের বাইরে থাকা মানুষ ও পরিযায়ী শ্রমিকদের ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হয়। যার কোনও হিসেব শেষ পর্যন্ত মেলেনি বলে অভিযোগ। এর পরেই প্রত্যেক উপভোক্তার রেশন নিশ্চিত করতে এসএমএস ও বায়োমেট্রিক পরিষেবা কার্যকরে প্রশাসন নজর দিতে বলে।
খাদ্য দফতর জানিয়েছে, অধিকাংশ উপভোক্তার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ থাকলেও খুব কম কার্ডে যোগাযোগের নম্বর রয়েছে। ফলে, নতুন পরিষেবা কার্যকর করতে গিয়ে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে বলে মনে করছেন কর্তারা। সে জন্য বিশেষ ফর্মের মাধ্যমে মোবাইল নম্বর যুক্ত করার কথা বলা হচ্ছে। নতুন ফর্মে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ডের সংযোগও করা যাবে। সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া শেষ হলেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন বিলি করা শুরু করবে জেলা খাদ্য দফতর। দফতরের দাবি, করোনা আবহে পৃথক ভাবে শিবির করে আধার সংযুক্তিকরণ কার্যত অসম্ভব। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতেও এই কাজ করা হবে। এ ছাড়া, নতুন রেশন কার্ড তৈরি বা চালু রেশন কার্ডের সংশোধন-পরিমার্জনের সময়ে আধার এবং মোবাইল নম্বরের সংযোগ বাধ্যতামূলক। জেলা, মহকুমা, ব্লক থেকে পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত উপভোক্তাদের মোবাইল নম্বর ছাড়াও সম্ভব হলে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর এবং ই-মেল আইডি চাওয়া হচ্ছে আবেদনপত্রে।
খাদ্য দফতরের কর্তাদের দাবি, সব উপভোক্তাকে এই পদ্ধতিতে আনতে সময় লাগবে। তবে এক বার সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এসএমএস এবং বায়োমেট্রিক পরিষেবা পুরোদমে চালু করা সম্ভব। আধার-যুক্ত হয়ে গেলে, বায়োমেট্রিক যাচাই প্রক্রিয়ায় আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন তোলা যাবে। খাদ্য নিয়ামক বলেন, ‘‘রেশনে স্বচ্ছতা আনতে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এতে এক জনের রেশন অন্য কেউ তুলতে পারবেন না।’’
রেশন ডিলারদের সংগঠন ‘ওয়েস্টবেঙ্গল এম আর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরা বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি চালু হলে, আমদেরও সুবিধা হবে।’’