তছনছ ঘর। নিজস্ব চিত্র
পরপর সাতটি বাড়ির তালা ভেঙে চুরি হল অণ্ডালে। বনবহাল ফাঁড়ি এলাকায় ইসিএলের কেন্দা এরিয়া কর্মী আবাসনে সোমবার সকালে এই ঘটনা নজরে পড়ে বাসিন্দাদের। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারেও রবিবার রাতে দু’টি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে শ’দুয়েক আবাসনে বহু কর্মী পরিবার নিয়ে বাস করেন। রবিবার রাতে সিঁদুলি কোলয়ারির সিনিয়র পার্সোনেল ম্যানেজার রঙ্গন চন্দ, কেন্দা এরিয়ার প্রশাসনিক আধিকারিক সুমিত সোরেন, নিরাপত্তা বিভাগের সাব-ইনস্পেক্টর অবোধভূষণ মাহাতো, এরিয়া কার্যালয়ের কর্মী সুস্মিতা দাস, আশিস কুমার, দেবাশিস গুপ্ত এবং শঙ্করপুর খোলামুখ খনির পার্সোনেল বিভাগের সুপারিন্টেন্ড গৌর পাল বাড়িতে ছিলেন না। রঙ্গনবাবুর অভিযোগ, ‘‘দরজার তালা ভেঙে ভিতর থেকে নগদ টাকা, গয়না চুরি করে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। সুস্মিতাদেবী, অবোধভূষণবাবু, গৌরবাবুরাও অভিযোগ করেন, তাঁদের বাড়ির সর্বস্ব তছনছ করে টাকা ও নানা জিনিসপত্র লুট করা হয়েছে।
এই ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ আবাসিকরা। ইসিএলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, কর্মী আবাসন চত্বরের চার পাশে যে পাঁচিল রয়েছে, তার একাংশ ভাঙা। আবাসনের পাঁচিল ঘেঁষে জঙ্গল তৈরি হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। আবাসনের কাছেই এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজারের বাংলোয় নিরাপত্তারক্ষী থাকেন। কিন্তু আবাসন চত্বরে কোনও রক্ষী নেই।
গৌরবাবুর দাবি, আগে কোনও দিন এই চত্বরে চুরির ঘটনা ঘটেনি। এক সঙ্গে সাতটি বাড়ির তালা ভাঙায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাসিন্দারা। ইসিএলের তরফে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোর ও পুলিশি টহল বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আইএনটিটিইউসি নেতা নরেন চক্রবর্তী, সিটু নেতা প্রবীর মণ্ডলেরা জানান, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেখান থেকে কিলোমিটার দশেক দূরে পাণ্ডবেশ্বরে কর্মী আবাসনে দশটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে মাস ছয়েক আগে। তাঁদেরও অভিযোগ, ইসিএল নিরাপত্তায় জোর না দেওয়ায় এমন ঘটনা ঘটছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এর আগে কয়েকটি চুরির কিনারা হয়েছে বলেও দাবি করেন পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান। আবাসন এলাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন খনি কর্তৃপক্ষ।
দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের রবিবার রাতে দু’টি বাড়িতে চুরি হয়। একটি বাড়ি তালাবন্ধ ছিল। অন্যটিতে বাড়ির লোকজন ঘুমোচ্ছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোজিনী নাইডু পথের বাসিন্দা অমল মজুমদার বাড়ি বন্ধ করে সপরিবারের বেড়াতে গিয়েছেন। সোমবার সকালে পড়শিরা দেখেন, বাড়ির পিছনের জানলার গ্রিল ভাঙা। পুলিশ এসে দেখে, ঘরে আলমারি ভাঙা। জিনিসপত্র ছড়িয়ে রয়েছে। কী কী খোয়া গিয়েছে, তা বাড়ির লোকজন ফিরে এলে জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সে রাতেই চুরি হয় আর একটি বাড়িতে। গৃহকর্তা অসীম রায় জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী ঘুমিয়ে ছিলেন। দুষ্কৃতীরা কখন ভিতরে ঢোকে টের পাননি। সকালে উঠে দেখেন, আলমারি ভাঙা। টাকা-গয়না চুরি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। সিটি সেন্টারের মতো এলাকায় পরপর দু’টি বাড়িতে চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। পুলিশ জানায়, যে ভাবে বন্ধ বাড়িতে চুরি হয়েছে তাতে আগে থেকে দুষ্কৃতীরা খোঁজ রেখেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।