ভরসা মালবাহী গাড়িই। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম বেতন দেওয়া-সহ একগুচ্ছ দাবিতে অন্ডাল থেকে উখড়া ও দুর্গাপুর রুটে অনির্দিষ্ট কালের জন্য মিনিবাস চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল আসানসোল মহকুমা মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স ইউনিয়নের উখড়া শাখা। এর জেরে চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়লেন যাত্রীরা।
এ দিন সকাল থেকেই মিনিবাস বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মুখে পড়েন উখড়া, খান্দরা, দক্ষিণখণ্ড, ময়রা, তামলা মোড়-সহ নানা কোলিয়ারি ও গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উখড়া থেকে দুর্গাপুরের ভাড়া ১০ টাকা হলেও এ দিন বাস বন্ধ থাকায় ম্যাটাডর, অটো ২০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে। ব্লক অফিসে আসার জন্য উখড়া স্টেশন মোড়ে প্রায় আধ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন রামায়ণ সাউ। তিনি বলেন, ‘‘কোনও বাস না মেলায় সময়ে পৌঁছতেও পারব না।’’ কোনও বাস না পেয়ে অন্ডাল মোড়ের বাসিন্দা শান্তি মণ্ডল ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘এ ভাবে টানা চলতে থাকলে বাসিন্দারা কার্যত কোনও কাজের জন্য দুর্গাপুর যেতেই পারবেন না।’’
যাত্রীদের দুর্ভোগের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেও ইউনিয়নের উখড়া শাখার সম্পাদক রাজু মুখোপাধ্যায় জানান, সরকারের নিয়ম অনুযায়ী চালকদের ২৪৪ টাকা, হেল্পারদের ২৪০ টাকা দেওয়ার কথা। কিন্তু অন্ডাল-উখড়া রুটে চালকদের ৮৩ টাকা, হেল্পারদের ৭৩ টাকা ও খোরাকি বাবদ ১০ টাকা করে দেওয়া হয় বলে জানান ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়া। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, এর আগেও গত বছর ১ নভেম্বর ও চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি অনির্দিষ্টকালের জন্য মিনিবাস ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। দু’বারই প্রশাসনের আশ্বাসে এক দিন পরেই ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়। তবে দু’বারই বিডিও-র নেতৃত্বে ইউনিয়ন, মালিক ও প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ভেস্তে যায়। ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজুবাবু অভিযোগ করেন, মালিকপক্ষ কোনও রকম সমঝোতায় না আসাতেই ওই দু’টি বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। রাজু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার দাবি না মেটা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। প্রশাসনকেও সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ ন্যূনতম বেতন দেওয়া ছাড়াও পিএফ, দুর্ঘটনাজনিত বিমা, ইএসআই কার্ড, সপ্তাহান্তে এক দিন সবেতন ছুটি, হঠাৎ মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ ও অবসরকালীন পাওনা টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে ইউনিয়নের তরফে।
অন্ডালের বিডিও মানস পাণ্ডা জানান, সোমবার দুর্গাপুরের মহকুমাশাসকের পৌরহিত্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। দুর্গাপুর মিনিবাস মালিক সংগঠনের তরফে দীপ্তেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বৈঠকে রফাসূত্র বের করার চেষ্টা হবে।’’ বিডিও জানান, পরিবহণ স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছে ওই রুটে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার বাস চালানোর আর্জি জানানো হয়েছে।