দুর্গাপুরে মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি। নিজস্ব চিত্র।
প্রস্তাবিত নতুন জেলার সীমানা নির্ধারণের আগে সর্বদল বৈঠক করতে হবে, এই দাবিতে বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল দুর্গাপুরের ১৩টি বাম গণ সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। তাদের হুঁশিয়ারি, মহকুমা বিভাজনের সম্ভাবনা কোনও ভাবে মানা হবে না। সে জন্য আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসকের দফতরের তরফে এই দাবি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানোনোর আশ্বাস দেওয়া হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন জেলা গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। দুর্গাপুর মহকুমার আওতায় থাকা কাঁকসা ও বুদবুদ থানা এলাকা প্রস্তাবিত নতুন জেলায় থাকছে না বলে প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি। রানিগঞ্জে যদি নতুন মহকুমা তৈরি হয় সেক্ষেত্রে অন্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বর থানার অংশও তার অধীনে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে দুর্গাপুর মহকুমা গুরুত্ব হারাবে বলে আশঙ্কা শহরের অনেকের।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, বর্ধমানে মাটি উৎসবের উদ্বোধনের দিন দলের দুর্গাপুরের কয়েক জন নেতা রাজ্যের এক মন্ত্রীর কাছে বিষয়টি নিয়ে কথা তুললে তিনি জানান, এখন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আগে হলে ভাবার সুযোগ ছিল। তবে তার পরে টানা সাত দিন কর্মবিরতি পালন করেছেন আইনজীবীরা। তার মধ্যে তৃণমূল আইনজীবী সেলের সদস্যেরাও অনেকে ছিলেন। কিন্তু তাছাড়া শাসকদলের নেতৃত্বের কাউকে জেলাভাগ নিয়ে এখনও তেমন সরব হতে দেখা যায়নি।
বিরোধীরা অবশ্য আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে মাঠে নেমেছে। দফায়-দফায় রাজ্যকে চিঠি, শহরে মিছিল, সই সংগ্রহ অভিযান করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুরসভা একটি কমিটি গড়লেও তার কোনও বৈঠক ডাকা হয় না বলে বিরোধীদের অভিযোগ। যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক তথা সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকার এ দিন জানান, এ ব্যাপারে সর্বদল বৈঠক ডাকার দাবি জানানো হয়েছে মহকুমা প্রশাসনের কাছে। শহরের বিশিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে শহরের ৫০ হাজার পরিবারের কাছে শপথবাক্যে সই সংগ্রহ করা হবে। ১৮ ফেব্রুয়ারি শহরের ৫০টি জায়গায় শপথবাক্য পাঠ করা হবে। এ ছাড়া ৫ মার্চ হাজার-হাজার মানুষ মানব প্রাচীরে সামিল হবেন। পঙ্কজবাবু বলেন, ‘‘প্রস্তাবিত নতুন জেলায় দুর্গাপুর মহকুমার গুরুত্ব যাতে অটুট থাকে, সেই লক্ষ্যে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’