শীতের বাজারে। নিজস্ব চিত্র
উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আলমারি থেকে ঝেড়েঝুড়ে শীতবস্ত্র গায়ে চাপাতেও দেখা যাচ্ছে অনেককেই। নানা ‘ফ্যাশন ট্রেন্ড’ অনুযায়ী শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে তৈরি দুর্গাপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ী থেকে শপিং মলগুলি, সকলেই।
দুর্গাপুরে এখনও শীত তেমন না পড়লেও শীতবস্ত্রের বিকিকিনি শুরু হয়েছে। কী ধরনের পোশাক রয়েছে বাজারে? চণ্ডীদাস বাজারে গিয়ে দেখা গেল, থরে থরে সাজানো শীতবস্ত্র। একই ছবি বেনাচিতি বাজারেও। শীতবস্ত্রের হরেক ফ্যাশনে পিছিয়ে নেই শপিং মলগুলিও। নামী ব্র্যান্ডের শীতবস্ত্রও অনেকে নেড়েচেড়ে দেখছেন। বেনাচিতি বাজারের এক ব্যবসায়ী জানান, মহিলাদের জন্য নানা ধরনের সোয়েটার, উলের লং কুর্তি, জ্যাকেট, পুলওভার, শাল, চাদর, এমনকী উলের চুড়িদারও রয়েছে। ফ্যাশনে পিছিয়ে নেই ছেলেরাও। সে দিকে খেয়াল রেখে সোয়েটার, জ্যাকেট, জিনসের শার্ট-সহ নানা কিছু এনেছেন বিক্রেতারা। তাতে থাকছে রকমারি নকশাও।
বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গোল গলা, ভি-নেক, হাই-নেক, টার্টল-নেক, ক্রু-নেকের মতো নানা ধরনের সোয়েটারের চাহিদা বেশি। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তরুণ, যুবক ক্রেতারা জিনিস পছন্দের ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছেন নকশার উপরে। তেমনই এক জন যুবক জানালেন, তিনি ভি-নেক সোয়েটার কিনেছেন। কেন? তাঁর যুক্তি, ‘‘ক্যাজুয়াল ও ফরমাল, দু’রকম পোশাকের সঙ্গেই এটা ভাল মানায়।’’ সাবেক ডিজাইনের পাশাপাশি চেন দেওয়া সোয়েটারও অনেকের পছন্দ। ফুল-হাতা জ্যাকেটের পাশে দিব্যি জায়গা করে নিয়েছে ‘স্লিভলেস জ্যাকেট’ও। কেউ বা আবার সাবেক ফ্যাশনকে বেছে নিতে পছন্দ করছেন নেহরু জ্যাকেটের মতো পোশাকও। তবে স্বাভাবিক ভাবেই সোয়েটারের দামটা একটু বেশি। সে সব নিয়ে অবশ্য অনেকেই মাথা ঘামাচ্ছেন না। যেমন, মার্কনি রোডের বাসিন্দা তরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জ্যাকেট না কি সোয়েটার, না কি দু’টোই— বাজার ঘুরে ঠিক করব।’’
মেয়েদের সোয়েটারের ক্ষেত্রে গোল গলা ও টার্টল-নেকের বেশি চাহিদা রয়েছে। কিছু সোয়েটারের গলায় স্কার্ফের বিকল্প হিসেবে ‘ওভার ফ্লিপ’ ডিজাইনের চাহিদা রয়েছে। মেয়েদের পছন্দের রঙের ক্ষেত্রে লাল, হালকা হলুদ, কোবাল্ট-ব্লু, রয়্যাল-ব্লু’র চাহিদা বেশি। একটু বেশি লম্বা ও স্ট্রাইপ সোয়েটারের বিক্রিও বেশ ভাল বলে জানান বিক্রেতারা। তবে তাঁরা জানান, এখনও সে ভাবে শীত না পড়ায় পাতলা সোয়েটারই বেশি পছন্দ করছেন মহিলারা। বাজার রয়েছে কলার দেওয়া সোয়েটারেরও। পাশাপাশি লম্বা কোটের ব্যবহারও গত কয়েক বছরের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে দাবি ক্রেতাদের। এমনকী অনেক তরুণীই ব্লেজারও পছন্দ করছেন বলে জানা গিয়েছে। বি-জোনের বধূ মৌমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ বার তাক লাগানো সব শীতের পোশাক এসেছে বাজারে। কোনটা ছেড়ে কোনটা কিনি বুঝতে পারছি না!’’
বিক্রি বাড়াতে ফ্যাশনের এই ট্রেন্ড অনুযায়ীই শীত বস্ত্রের পসরা সাজিয়েছেন বলে জানান বিক্রেতারা। চণ্ডীদাস বাজারের বিক্রেতা রতন দেবনাথ বলেন, ‘‘আগের বার তেমন শীত না পড়ায় বিক্রি ভাল হয়নি। এ বার শুরুটা অবশ্য বেশ ভালই হয়েছে। বাকিটা দেখা যাক।’’