স্ত্রীকে খুনের দায়ে প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। বুধবার বর্ধমানের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক) শেখ মহম্মদ রেজা জানান, কারাদণ্ডের সঙ্গে তিন হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। অন্যথায় আরও তিন মাস জেল।
দোষী শ্যামসুন্দর সেন কালনা থানার সিমলনের কাছে মছলন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। মামলার সরকারী আইনজীবী অজয় দে জানান, আদালতে সাক্ষ্যের সময় শ্যামসুন্দর তাঁর দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁর মেয়ের সাক্ষ্যও শ্যামসুন্দরবাবুর বিরুদ্ধে গিয়েছে। ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণের পরে বিচারক তাঁর রায় শোনান এ দিন। যদিও শ্যামসুন্দরের আইনজীবী পার্থ শীল ওই রায়ের বিরোধীতা করে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের এপ্রিলে ওই দম্পতি তাঁদের দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে খণ্ডঘোষের পলেমপুরে এসেছিলেন। সেখানেই গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় অর্চনা সেনের (৩৫) দেহ উদ্ধার হয়। ২০ এপ্রিল অর্চনাদেবীর মা পূর্ণিমাদেবী পুলিশের কাছে জামাই শ্যামসুন্দরের বিরুদ্ধে মেয়েকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুনের অভিযোগ করেন। সে দিন রাতেই পুলিশ মছলন্দপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করে। ১১ দিনের মাথায় তদন্তকারী অফিসার চার্জশিট পেশ করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালীন শ্যামসুন্দরবাবুর নাবালক পুত্র সৌরভ সেন ও কিশোরী মৌসুমী বাবার বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেন। সরকারি আইনজীবীর কথায়, “মৌসুমী আদালতকে জানিয়েছিল ‘বাবা ও মা একঘরে শুয়েছিল। আমি, ভাই দিদিমার কাছে শুয়েছিলাম। সকালে উঠে মাকে ডাকতে গিয়ে দেখি, দরজায় শিকল দেওয়া আছে। শিকল খুলে ঘরে ঢুকে দেখি, মায়ের গলায় কাপড়ের ফাঁস। বাবা নেই।’ এই সাক্ষ্যই শ্যামসুন্দরবাবুর উপস্থিতি প্রমাণ করে দেয়।” পুলিশ জানিয়েছে, বছর ১৫ আগে ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীর উপর নির্যাতন করার তথ্যও বিচার চলাকালীন উঠে আসে। তদন্তকারী অফিসার আদালতে বধূ নির্যাতন করে খুনের মামলা সাজালেও বিচারক অভিযুক্তকে সরাসরি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন।