কে বা কারা কী ভাবে এই কাজ করছে, তা জানতে চেয়েছেন নেত্রী। —ফাইল চিত্র।
নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া আইএনটিটিইউসি-র নামে রসিদ ছাপিয়ে বাস, মিনিবাস, অটো চালকদের কাছে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল আসানসোলের সিটি বাসস্ট্যান্ডে। এ বিষয়ে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন সংগঠনের জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন। কে বা কারা কী ভাবে এই কাজ করছে, তা জানতে চেয়েছেন নেত্রী, জানান শিবদাসন। তাঁর দাবি, এ বিষয়ে শুক্রবার সকাল থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করা হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরে এখানে আইএনটিটিইউসি-র নাম ছাপানো রসিদে ‘তোলাবাজি’ চলছে, এমনই অভিযোগ করেছিলেন বাস, মিনিবাস ও অটো চালকদের একাংশ। অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে বাস, মিনিবাস ও অটো চালকদের কাছ থেকে ‘আসানসোল সাব-ডিভিশনাল মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’ এবং আইএনটিটিইউসি লেখা রসিদ দিয়ে দু’টাকা থেকে পাঁচ, দশ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে শহরে চর্চা শুরু হয়। তবে এ বিষয়ে তাঁর কাছে কেউ অভিযোগ করেননি বলে তখন জানিয়েছিলেন শিবদাসন। তবে তিনি ‘খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ’ করার কথা জানিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি প্রশাসনিক বৈঠক উপলক্ষে জেলায় এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শিবদাসনের দাবি, ‘‘বিষয়টি একেবারেই ভাল ভাবে নেননি নেত্রী। তিনি জানতে চেয়েছেন কে বা কারা কী ভাবে এই কাজ করছে। আমাকে তিনি খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেছেন।’’ শিবদাসনের দাবি, সংগঠনের কোনও নেতা বা কর্মীকে আইএনটিটিইউসি-র নাম লেখা রসিদ দিয়ে টাকা আদায়ের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
এ দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চালকদের অভিযোগ, নিত্য দিন এই তোলা জমা করতে হয় তাঁদের। যে সব বাস ও মিনিবাস রাতে সিটি বাসস্ট্যান্ডে থাকে সেগুলির চালকদের সকালের ‘ট্রিপ’ নিয়ে বেরনোর আগেই দিনের টাকাটা দিতে হয়। দিনভর এই টাকা আদায় করা হয়। বেশি পরিমাণে টাকা দিতে হয় সিটি বাসস্ট্যান্ডে আসা-যাওয়া করা ঝাড়খণ্ডের প্রায় ৮০টি বাসকেও। তা ছাড়া, ঝাড়খণ্ড বা লাগোয়া জেলা বীরভূম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পূর্ব বর্ধমানের একাধিক জায়গায় যাতায়াতকারী দূরপাল্লার বাসের ছাদে পণ্য আনা-নেওয়ার দালালির কাজটি করে ওই তোলাবাজেরা। এরা পরিবহণ আইন ভেঙে বাস মালিক ও দোকানদারদের সঙ্গে যোগসাজস করে বাসের ছাদে পণ্য চাপিয়ে পরিবহণ করায়। বিনিময়ে মোটা টাকা আদায় করে। জানা গিয়েছে, প্রতি দিন এ ভাবে প্রায় চল্লিশ হাজার টাকা পর্যন্ত তোলা আদায় করা হচ্ছে সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে। ভি শিবদাসন জানিয়েছেন, খোঁজখবর করে বিস্তারিত রিপোর্ট তিনি খুব দ্রুত দলনেত্রীর কাছে পাঠাবেন।