ফাইল চিত্র।
অণ্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরকে আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে শুক্রবার ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য আগামী অর্থবর্ষে ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে তা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক বিকাশে সহায়ক হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ী মহল।
দমদম বিমানবন্দরের উপর চাপ কমাতে দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়ার প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু কলকাতার কাছাকাছি এক লপ্তে প্রয়োজনীয় জমি রাজ্য সরকার জোগাড় করে দিতে না পারায় কেন্দ্র দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়ার কাজে হাত দিতে পারছে না। রাজ্য সরকার বরাবর জানিয়ে এসেছে, অণ্ডালকেই দমদমের দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হোক। সাধারণত একটি বিমানবন্দরের ৪০-৫০ কিলোমিটারের মধ্যে দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়া হয়। যাতে একটি বিমানবন্দরে নেমে দ্রুত দ্বিতীয় বিমানবন্দরে গিয়ে অন্য উড়ান ধরতে পারেন যাত্রীরা। কিন্তু অণ্ডালের দূরত্ব অনেক বেশি। তাই কেন্দ্র রাজি নয়।
অণ্ডাল বিমাননগরীতে রাজ্যের শেয়ার বেড়ে হয়েছে ৪৭.৪৩ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী ২০২০-র ৮ ডিসেম্বর রানিগঞ্জের সভা থেকে জানান, বিমাননগরীর কাজকর্ম পরিচালনার সুবিধার জন্য মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম এবং বিমাননগরী নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থার (বিএপিএল) প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সভা থেকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আগামী দিনে হয়তো অণ্ডাল বিমানবন্দর দমদম বিমানবন্দরের মতো হয়ে যাবে। একটা বিমানবন্দরেরও একটা আয়ু থাকে। সুতরাং অণ্ডাল বিমানবন্দর একদিন খুব গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর হয়ে যাবে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যোগাযোগ অণ্ডাল বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণা শুনে ‘দুর্গাপুর চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সভাপতি কবি দত্ত বলেন, ‘‘যদি সত্যিই অণ্ডাল থেকে আর্ন্তজাতিক উড়ান চালু হয় তবে সেটা খুবই ভাল হবে। দক্ষিণবঙ্গের বড় অংশ, ঝাড়খণ্ডের মানুষের সুবিধা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হবে।’’ বেঙ্গল সুবার্বান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়-এর সাধারণ সম্পাদক প্রফুল্ল ঘোষ বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে নানা কারণে পিছিয়ে পড়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল। দীর্ঘদিন নতুন কোনও লগ্নি আসেনি। যদি অণ্ডাল বিমানবন্দর থেকে আর্ন্তজাতিক উড়ান চালু হয় তাহলে নিশ্চিত ভাবেই এই এলাকা ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছি।’’
কলেজ ছাত্র অভিষেক রায়, অজয় চট্টরাজেরা জানান, এই এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান ধরতে হলে গাড়িতে করে অন্তত তিন ঘণ্টারও বেশি সময় রাস্তা উজিয়ে দমদম যেতে হয়। অণ্ডাল থেকেই আন্তর্জাতিক উড়ান ধরা গেলে সময় ও খরচ বাঁচবে বলে জানান তাঁরা।